পরকীয়ার কারণে ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যা করে লাশ কেটে ২৬ খণ্ডে ভাগ, মূল আসামি গ্রেফতার

পরকীয়ার কারণে ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যা করে লাশ কেটে ২৬ খণ্ডে ভাগ, মূল আসামি গ্রেফতার

আইন আদালত ডেস্ক

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরকীয়ার কারণে ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যা করে তার লাশ ২৬টি খণ্ডে বিভক্ত করার অভিযোগে তার বন্ধু জরেজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আশরাফুল হক (৪৩) এবং তার বন্ধু জরেজ ঢাকায় আসেন গত ১১ নভেম্বর। এরপর থেকে আশরাফুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গত ১৩ নভেম্বর রাতের দিকে হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে দুটি নীল রঙের ড্রামের মধ্যে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল, যা পুলিশকে অবহিত করা হয়।

পুলিশ মরদেহ দুটি ড্রাম থেকে বের করে দেখে, খণ্ডিত মরদেহগুলো কালো পলিথিনে মোড়ানো এবং ড্রামের মধ্যে চাল ছিল। পরে সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করেন এবং তা শনাক্ত করেন।

ধৃত আসামি জরেজুল ইসলাম পরকীয়ার সম্পর্কের জেরে আশরাফুল হককে হত্যার পর মরদেহ ২৬টি খণ্ডে বিভক্ত করে দুটি নীল রঙের ড্রামে ভরে রেখেছিল। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছোট বোন আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন, যেখানে জরেজুল ইসলামকে প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলায় আনজিরা বেগম উল্লেখ করেন, তার ভাই আশরাফুল হক দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলু সহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন এবং ১১ নভেম্বর রাতে জরেজুল ইসলামকে নিয়ে ঢাকায় আসেন। এরপর থেকে আশরাফুলের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায় এবং তার পরিবার সন্দেহ করতে থাকে যে, জরেজুল ইসলাম তাকে হত্যা করেছে।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ১১ নভেম্বর রাতে জরেজুল ইসলাম, তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে আশরাফুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর মরদেহ ২৬টি খণ্ডে বিভক্ত করে দুটি ড্রামে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত করেছে, এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল এবং আসামিরা হত্যার পর মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেছিল।

গ্রেফতার হওয়া জরেজুল ইসলামকে হেফাজতে নিয়ে পুলিশের আরও তদন্ত চলছে এবং তার সহযোগীদের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: ডিএমপি, সংবাদ সংস্থা

আইন আদালত