আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর ভারতের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও তিনি সরাসরি ভোট চুরির অভিযোগ করেননি, তবে মহাগাঠবন্ধন জোটের প্রার্থীদের ভোট দেওয়া ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা বার্তায় রাহুল গান্ধী বলেন, “বিহারের লাখ লাখ ভোটার, যারা মহাগাঠবন্ধন জোটের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন, তাদের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিহারের এই ফলাফল সত্যিই বিস্ময়কর। আমরা এমন একটি নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারিনি যা শুরু থেকেই সুষ্ঠু ছিল না।”
বিহারের বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৪৩টি। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ দুই দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম দফা ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ১২১টি আসনে, যেখানে ভোটদান ছিল ৬৫ শতাংশের বেশি। দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হয় ১১ নভেম্বর ১২২টি আসনে, যেখানে ভোট পড়েছিল ৬৮ শতাংশের বেশি। দুই দফার মিলিত ভোট হার প্রায় ৬৭ শতাংশ।
এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল বিজেপি-জনতা দল ইউনাইডেট (জেডিইউ) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এবং কংগ্রেস-রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতৃত্বাধীন মহাগাঠবন্ধন জোটের মধ্যে। ফলাফল অনুযায়ী বিধানসভার ২৪২টি আসনের মধ্যে ২০২টিতে জয় পেয়েছে এনডিএ জোট। বিরোধী মহাগাঠবন্ধন জোটের প্রার্থীরা ৩৫টি আসনে জয়লাভ করেছে।
এনডিএ জোটের সবচেয়ে বড় শরিক দল বিজেপি ৮৯টি আসনে জয় পায়। জোটের দ্বিতীয় শরিক এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডিইউ ৮৫টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। এছাড়া চিরাগ পাসওয়ানের নেতৃত্বাধীন লোক জনশক্তি পার্টি ১৯টি এবং জিতেন রাম মাঝির নেতৃত্বাধীন আওয়াম মোর্চা পার্টি ৫টি আসনে জয় পেয়েছে।
বিহারে শেষ লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালে। সেই নির্বাচনের তুলনায় এবার কংগ্রেসের ফলাফল উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে। ২০২০ সালে কংগ্রেস ৭০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল এবং ১৯টি আসনে জয় লাভ করেছিল। এবার ৬১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র ৬টিতে জয়লাভ করেছে দলটি।
মহাগাঠবন্ধনের অন্য শরিক আরজেডির ফলাফলও কংগ্রেসের চেয়েও খারাপ। ২০২০ সালের নির্বাচনে ১৪৪টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৭৫টি আসনে জয়লাভ করেছিল দলটি। এবার ১৪৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র ২৫টি আসনে জেতেছে।
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, “আমাদের লড়াই সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষার লড়াই। কংগ্রেস এবং ইনডিয়া জোট এই ভোটের ফলাফল গভীরভাবে পর্যালোচনা করবে এবং গণতন্ত্রকে রক্ষার লড়াইকে আরও কার্যকর করতে সচেষ্ট হবে।”


