আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের বিহার রাজ্যে সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ)। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, ২৪৩ আসনের মধ্যে এনডিএ জোট জয় পেয়েছে ২০২টিতে। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধন পেয়েছে ৩৫টি আসন।
এনডিএর বড় শরিক বিজেপি এককভাবে জয় পেয়েছে ৮৯ আসনে। জোটের দ্বিতীয় প্রধান দল এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডিইউ পেয়েছে ৮৫টি আসন। এ ছাড়া চিরাগ পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি ১৯টি এবং জিতেন রাম মাঝির আওয়াম মোর্চা পার্টি ৫টি আসনে জয়ী হয়েছে।
বিহার রাজ্যের মোট ২৪৩টি আসনের মধ্যে প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয় ৬ নভেম্বর ১২১টি আসনে, যেখানে ভোটের হার ছিল ৬৫ শতাংশের বেশি। দ্বিতীয় দফায় ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ, এ দফায় ভোট পড়ে প্রায় ৬৮ শতাংশ। দুই দফা মিলিয়ে ভোটের গড় হার দাঁড়ায় প্রায় ৬৭ শতাংশ। ভোটগণনা শুরু হয় শুক্রবার সকাল ৮টায়, আর রাতে নির্বাচন কমিশন ফলাফল ঘোষণা করে।
নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এনডিএ জোট এবং মহাগঠবন্ধনের মধ্যে। বিরোধী জোটের নেতৃত্বে ছিল আরজেডি ও কংগ্রেস। এনডিএর নিরঙ্কুশ জয়ে রাজ্যটিতে আবারও ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
এবারের নির্বাচনে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হিসেবে আলোচনায় ছিল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের নবগঠিত জন সুরাজ পার্টি। তবে দলটির একটিও আসন না পাওয়ায় তাদের ভরাডুবি ঘটেছে। অপরদিকে, তেলেঙ্গানার রাজনীতিবিদ ও হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসির নেতৃত্বাধীন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) বিহারে ৫টি আসনে জয় পেয়ে নতুন শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বিজয়ের পর এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “বিহারের নারী ও তরুণরা এনডিএকে বিজয়ী করেছে। কিছু রাজনৈতিক দল সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করেছে, কিন্তু জনগণ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গঙ্গা নদী বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবাহিত হয়, তেমনি বিহারের এই জয় পশ্চিমবঙ্গের বিজয়ের পথ তৈরি করেছে।”
আগামী ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিতব্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মোদি বলেন, “বাংলার ভাইবোনদের আশ্বস্ত করছি, আমরা একসঙ্গে কাজ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে জঙ্গলরাজ দূর করব।”
বিহারে এনডিএর এই বড় জয় বিজেপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নতুন গতি এনে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নির্বাচনী কৌশল ও রাজনৈতিক তৎপরতায় বিহারের ফলাফল প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


