আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০-এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আয়োজিত সেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জলবায়ু অর্থায়ন কোনো দরকষাকষির বিষয় নয়; এটি টিকে থাকা, ন্যায়বিচার ও মানব মর্যাদার প্রশ্ন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখানে সমস্যার কথা আবার বলার জন্য নয়, বরং এমন সমাধান খুঁজতে এসেছে যা দেশের ভোগান্তির গভীরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে কথা বলছে—যাদের জীবন, ঘরবাড়ি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিদিন জলবায়ু সংকটের কারণে বদলছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্রবিন্দুতে না রাখলে পুরো কাঠামো অর্থহীন হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়তে থাকা ক্ষয়ক্ষতির চাপ মোকাবিলায় তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী মূল তথ্য উপস্থাপনকালে বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব জাতীয় লস অ্যান্ড ড্যামেজ কাঠামো প্রস্তুত করছে, যা আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কার্যকর হবে। তিনি আরও জানান, এই কাঠামোতে তরুণদের কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সেশনের প্যানেল আলোচনার সঞ্চালক ও ইয়োঙ্গোর লস অ্যান্ড ওয়ার্কিং গ্রুপের কন্টাক্ট পয়েন্ট জাসমিমা সাবাতিনা জানান, তরুণ প্রতিনিধিরা তহবিলে সহজ প্রবেশাধিকার, রিয়েল-টাইম স্বচ্ছতা টুল, আগাম সতর্কতাভিত্তিক অর্থায়ন, ছোট অনুদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি, তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্থায়ী যুব প্রতিনিধিত্ব এবং তথ্যভিত্তিক সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরির দাবি তুলেছেন।
প্যানেল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান, নেপালের তরুণ প্রতিনিধি প্রয়াশ অধিকারী, জলবায়ু নীতি বিশ্লেষক হারজিৎ সিংহ, পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তারা। আলোচনায় তরুণদের অংশগ্রহণ এবং তাদের নেতৃত্বে কাঠামোগত সমাধান তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দৃষ্টিকোণ তুলে ধরার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায্য ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করতে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এছাড়া জাতীয় লস অ্যান্ড ড্যামেজ কাঠামোর সঙ্গে যুব অংশগ্রহণের সমন্বয় ভবিষ্যতে জলবায়ু অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।


