লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে রবিবার ইসরায়েলি সেনারা শান্তিরক্ষীদের দিকে গুলি চালিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন বাহিনী ইউনিফিল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ভুলক্রমে নীল হেলমেটধারীদের ‘সন্দেহভাজন’ ভেবে সতর্কতামূলক গুলি ছুঁড়েছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘খারাপ আবহাওয়া পরিস্থিতি’কে দায়ী করে বলেছে, তাদের লক্ষ্য ইচ্ছাকৃতভাবে জাতিসংঘের সদস্যদের দিকে ছিল না।
এর আগে রবিবার ইউনিফিল এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ‘লেবাননের ভূখণ্ডে ইসরায়েল যে স্থাপনা তৈরি করেছে তার নিকটস্থ একটি অবস্থান থেকে একটি মেরকাভা ট্যাঙ্ক দিয়ে ইউনিফিল শান্তিরক্ষীদের ওপর গুলি চালিয়েছে’, এবং ভারী মেশিনগানের গুলি তাদের কর্মীদের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ মিটার দূরে আঘাত করেছে।
বাহিনীটি বলেছে, ট্যাঙ্কটি ইসরায়েলি অবস্থানের ভেতরে সরে যাওয়ার পর শান্তিরক্ষীরা ‘৩০ মিনিট পরে নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হন’।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘দক্ষিণ লেবাননের আল-হামামেস এলাকায় দুই সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছিল। সেনারা এরপর সতর্কতামূলক গুলি চালায় এবং সন্দেহভাজনরা দূরে সরে যায়। কোনো আহতের খবর পাওয়া যায়নি।
একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ওই সন্দেহভাজনরা ছিলেন জাতিসংঘের সেনা, যারা এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ইউনিফিল সেনাদের দিকে কোনো ইচ্ছাকৃত গুলি চালানো হয়নি।’
ইউনিফিল লেবাননের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে গত নভেম্বর ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে কাজ করছে।
তারা বলেছে, এ ধরনের গোলাগুলি ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের একটি গুরুতর লঙ্ঘন’, যা ২০০৬ সালে ইসরায়েল–হিজবুল্লাহ সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছিল এবং গত নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির ভিত্তিও তৈরি করেছিল।
ওই চুক্তি এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা শত্রুতার অবসান ঘটানোর লক্ষ্য নিয়েছিল, যা গাজা যুদ্ধ শুরুর পর শুরু হয়েছিল।
চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়ে্লের দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল, কিন্তু তারা পাঁচটি এলাকায় অবস্থান ধরে রেখেছে, যেগুলোকে তারা কৌশলগত বলে মনে করে।
ইসরায়েল লেবাননে নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, মূলত বলছে যে তারা হিজবুল্লাহর অবস্থান ও সদস্যদের টার্গেট করছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন এবং আনুষ্ঠানিক সামরিক লিয়াজোঁ চ্যানেলের মাধ্যমে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
রবিবারের ঘটনাটি প্রথম নয়—ইউনিফিল এর আগেও ইসরায়েলকে তাদের শান্তিরক্ষীদের ঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ করেছে।
বাহিনীটি বলেছে, ‘আবারো আমরা আইডিএফকে শান্তিরক্ষীদের ওপর বা তাদের নিকটে যেকোনো আগ্রাসী আচরণ ও হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানাই।’


