রাজধানী ডেস্ক:
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ভবনের সামনের সড়কে শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত ৮টা ২০ মিনিটে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
শেরেবাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক জানান, একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর পর দ্রুত পালিয়ে যায়। বর্তমানে পুলিশ অভিযানের মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত ও আটক করার চেষ্টা করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় এলাকায় ভীতি ও আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় কোনো ব্যক্তিগত বা সম্পত্তির বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।
এর আগে একই দিনে, রাতের আগে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর হাতিরঝিলে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে ঘটনাস্থলে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের ঘটনা একটি পরিকল্পিত আক্রমণের অংশ হিসেবে ঘটতে পারে। বিশেষভাবে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চব্বিশের জুলাই আন্দোলন দমন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়ের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘নিষিদ্ধ’ কোনো দলের কর্মসূচির প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন লাগানো এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে এবং সন্দেহভাজন কার্যক্রম তৎপরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া, সাধারণ জনগণকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বিস্ফোরণের উৎস ও ব্যবহৃত পদার্থ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছেন। প্রাথমিক তদন্তে ধরা পড়েছে, বিস্ফোরণটি একটি ছোট ধরনের ককটেল ব্যবহার করে ঘটানো হয়েছে, যা দ্রুত বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম।
নগরবাসীর কাছে পুলিশ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অচেনা বা সন্দেহজনক সামগ্রী এবং ব্যক্তি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ থানায় জানানোর জন্য। এছাড়া, নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি জনসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে সংশ্লিষ্ট যানজট ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীতে নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের এই কার্যক্রমের ফলে পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক ঘটনায় জনজীবন ও যানবাহনে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে।


