রাজনীতি ডেস্ক
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা দেশের আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থার শক্তিশালী প্রতিষ্ঠা হিসাবে দেখা হচ্ছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে জামায়াতে ইসলামী দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে এই রায় সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “আজকের রায়টি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কোনো সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হলো। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম, এবং এটি দীর্ঘদিন মনে রাখা হবে।”
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, রাষ্ট্রের বা সরকারের কোন নেতা বা ক্ষমতাবান ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। জামায়াতে ইসলামী মনে করে যে, এই রায়টি এক ধরনের সুবিচার, যেটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর হৃদয়ে স্বস্তি এনে দিয়েছে, যদিও তাদের ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়।”
তিনি আরো বলেন, “বিচারের প্রক্রিয়া ছিল স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, এবং আন্তর্জাতিক মানের। আমরা বিশ্বাস করি, এই বিচারের বিরুদ্ধে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। জামায়াতে ইসলামী নেতাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের পূর্ববর্তী বিচারের ক্ষেত্রে এই ধরনের স্বচ্ছতা ছিল না, এবং সেসব রায় প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।”
মিয়া গোলাম পরওয়ার মন্তব্য করেন, “আজকের রায় একটি বার্তা দেয় যে, দেশের বিচার ব্যবস্থায় যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের সামনে একটি বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। তারা যেন ফ্যাসিবাদী না হয়ে ওঠেন এবং আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখান।”
তিনি আরও জানান, “যারা নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, ক্রসফায়ারে অথবা অন্য কোন পন্থায়, তাদের পরিবারগুলোর জন্যও এই রায় কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। তবে, এই রায়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রের একজন প্রধানের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা আরও শক্তিশালী করবে।”
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের বক্তব্যের পর, জামায়াতে ইসলামী দলের অন্যান্য নেতারা, যেমন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, ড. এইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাোলানা আব্দুল হালিম, এবং সেলিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন যে, এটি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামী দলের পক্ষ থেকে এই রায়ের মাধ্যমে দেশের জনগণের জন্য সুবিচারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।


