আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবু সাঈদ হত্যা মামলার ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবু সাঈদ হত্যা মামলার ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ

আইন আদালত ডেস্ক

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মামলায় সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ দিন সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এ দিন দুটি সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। এর আগে ১৬ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক। তিনি ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। ১৭ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক। তার জবানবন্দিতে ১৬ জুলাইয়ের আন্দোলন সংক্রান্ত তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা তুলে ধরেন।

এ মামলায় গত ১৩ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান এবং তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হন।

এ মামলায় ১১ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ। তিনি ওই দিনের ঘটনায় এক প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান, যিনি জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

এ পর্যন্ত মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে ৬২ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে, বেরোবির সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ২৪ আসামি এখনও পলাতক। তাদের পক্ষে গত জুলাই মাসে সরকারী খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।

এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার ২৭ আগস্ট শুরু হয় এবং মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন জবানবন্দি দেন। এরপর বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তা, প্রত্যক্ষদর্শী, এবং মামলার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মোট ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, পলাতক আসামিদের উপস্থিতি নিশ্চিত না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম কিছুদিন পেছানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলার ফলাফল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।

আইন আদালত