রাজধানীতে গত ১০ মাসে ১৯৮টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে

রাজধানীতে গত ১০ মাসে ১৯৮টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে

আইন আদালত ডেস্ক

ঢাকা মহানগরীতে গত ১০ মাসে ১৯৮টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ২০টি হত্যাকাণ্ড ঘটে রাজধানীতে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তিনি আরও জানান, রাজধানীর পল্লবীতে সাম্প্রতিক একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে পল্লবীর পুরোনো থানার কাছে সি ব্লকে অবস্থিত একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে এখন পর্যন্ত একজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের মূল তথ্য উদঘাটন সম্ভব হবে।

পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, মাস্ক ও হেলমেট পরিহিত তিনজন ব্যক্তি দোকানে প্রবেশ করে খুব কাছ থেকে গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে চলে যায়। হামলার সময় তিনি দোকানের চেয়ার ধরে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনাস্থলে থাকা অন্য ব্যক্তিরা অস্ত্রধারীদের প্রতিরোধ করতে পারেননি। হত্যাকাণ্ডটি মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে সম্পন্ন হয়।

ডিএমপি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, রাজধানীতে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশি নজরদারির মধ্যেই ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের ধরন, ব্যবহারকৃত অস্ত্র এবং অভিযুক্তদের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য স্বতন্ত্র ইউনিটগুলো তদন্ত চালাচ্ছে। পুলিশ বলছে, সব ধরনের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে দ্রুততা এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য আহরণের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, নগর এলাকায় এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা স্বাভাবিক সীমার চেয়ে বেশি, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট, হত্যার উদ্দেশ্য ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহের জন্য সবকটি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

ডিএমপি আরও জানিয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যকরী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, জনবহুল এলাকা ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশি উপস্থিতি নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাছাড়া, সিসি ক্যামেরা নজরদারি ও স্থানীয় নজরদারি ইউনিটের কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে, যাতে অপরাধী দমনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

পুলিশি সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের ধরন এবং গতিশীলতা বিচার করে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধীদের শনাক্ত ও আটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য শহরে আরও কঠোর নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।

রাজধানীতে ক্রমবর্ধমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং পুলিশের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের ওপর যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য প্রকাশ করা হবে, যা অপরাধ দমনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

আইন আদালত