আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবকে ন্যাটোর বাইরে প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এই ঘোষণা দুই দেশের মধ্যে নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের পর দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ডিনারে অংশগ্রহণকালে ট্রাম্প এ তথ্য জানান।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। তিনি বলেন, এটি সৌদি আরবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ওয়াশিংটন সফরে দুই দেশ বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এসমূহের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যৌথ ঘোষণা, যা আগামী কয়েক দশক ধরে বিলিয়ন ডলারের সহযোগিতার আইনি ভিত্তি তৈরি করবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই সহযোগিতা পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মানদণ্ড মেনে বাস্তবায়ন করা হবে।
দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী, সৌদি আরবের সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবে নতুন অস্ত্র সরবরাহ, বিশেষ করে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের বিক্রয় অনুমোদন দিয়েছে। এই পদক্ষেপকে দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের প্রতিরক্ষা চুক্তি ও মূল্যে উচ্চমানের সামরিক সহযোগিতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অঞ্চলে শক্তি ভারসাম্য রক্ষায় এবং সম্ভাব্য সংঘাত নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে ঘোষণার মর্যাদা বিভিন্ন কৌশলগত সুবিধা প্রদান করে। এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ সামরিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, যৌথ প্রশিক্ষণ, উন্নত সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং বৃহত্তর কৌশলগত সমর্থন। এটি শুধু দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে গভীর করবে না, বরং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত উপস্থিতি ও প্রভাবও শক্তিশালী করবে।
সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ধরনের চুক্তি ও সহযোগিতা দেশের নিরাপত্তা, সামরিক সক্ষমতা এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগ ও প্রতিরক্ষা চুক্তি দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


