সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিয়েছে

সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিয়েছে

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে এমবিএস এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমরা ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বর্তমান বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি করে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে যাচ্ছি।” এমবিএস বলেন, এই বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সহ বিভিন্ন খাতে বহু চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে, যা নতুন বিনিয়োগ সুযোগ সৃষ্টি করবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের সামনে কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “মানে আপনি বলছেন, ৬০০ বিলিয়ন এখন ১ ট্রিলিয়ন হবে?” জবাবে এমবিএস নিশ্চিত করেন যে বর্তমান চুক্তিগুলো এই বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে সহজ করবে। ট্রাম্প বলেন, “৬০০ বিলিয়ন নিশ্চিতভাবে বিনিয়োগ হবে, তবে এটি আরও কিছুটা বাড়তে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনত বান্দার আল সউদ এই বৈঠককে “সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, দুই দেশ কয়েকটি বড় দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। তবে এই চুক্তিগুলোর বিস্তারিত উল্লেখ করেননি।

রাষ্ট্রীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব বিনিয়োগ চুক্তি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা শক্তিশালী করবে, এবং সৌদি ও মার্কিন নাগরিকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এছাড়া, তারা বলছেন যে এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা সহযোগিতাকেও দৃঢ় করবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সৌদি আরবের এই বিনিয়োগ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মার্কিন অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বৃহৎ বিনিয়োগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি ও বেসরকারি খাতে নতুন প্রকল্প শুরু হবে, যা ব্যবসায়িক পরিবেশকে উদ্দীপিত করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণাকে উৎসাহ দেবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে, এই বিনিয়োগ চুক্তি সৌদি ও মার্কিন অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর করবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এটি উভয় দেশের পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এছাড়া, এই বিনিয়োগ নতুন কর্পোরেট প্রকল্প ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব তৈরি করতে পারে, যা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে প্রসারিত করবে।

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্সের এই ঘোষণা দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককেও আরও মজবুত করবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমন্বয় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়াও, এটি দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা, অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।

পরামর্শকরা জানিয়েছেন, ১ ট্রিলিয়ন ডলারের এই বিনিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে এটি মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার মধ্যে অর্থনৈতিক সংযোগ বৃদ্ধি করবে। এর পাশাপাশি, এটি বৈশ্বিক বিনিয়োগ ধারা ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

মোটকথা, সৌদি আরবের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, এটি কৌশলগত ও প্রযুক্তিগতভাবে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। এই পদক্ষেপের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তি খাতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে সৌদি আরবের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে।

আন্তর্জাতিক