জাতীয় ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য–ব্যর্থতা নিয়ে যে সমালোচনা করা হয়, তার অনেকটাই পুরো বাস্তব চিত্র প্রতিফলিত করে না। তার মতে, স্বার্থান্বেষী নানা গোষ্ঠীর তীব্র প্রতিরোধ সত্ত্বেও স্বল্প সময়ের মধ্যে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, তা উপদেষ্টামণ্ডলীর নিষ্ঠা ও সরকারের কার্যকারিতার প্রকাশ।
শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাসে এসব মন্তব্য করেন। তিনি নীতি প্রণয়ন, নির্দেশনা তৈরির প্রক্রিয়া এবং প্রশাসনিক জটিলতা নিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। দায়িত্ব নেয়ার আগে নীতিমালা, দিকনির্দেশনা বা প্রস্তাবিত আইন–বিধি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিটি মতামত ও প্রতিবেদন তিনি গভীরভাবে অনুসরণ করতেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিস্থিতি বদলে গেছে; এখন নীতি বা আইন পাস বা বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত তার আগ্রহ জন্মায় না।
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে নীতিমালা বা সংস্কার সংক্রান্ত লেখা তৈরি করা সহজ হলেও বাস্তব প্রয়োগ অনেক কঠিন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। শফিকুল আলম বলেছেন, আজ চাইলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বাংলাদেশের জন্য বিশদ সংস্কার–প্রস্তাব প্রস্তুত করা সম্ভব, কিন্তু বাস্তবিকভাবে তা কার্যকর করা অত্যন্ত জটিল।
গত ১৬ মাসের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি জানান, বাজারবান্ধব, কর্মসংস্থানমুখী এবং জনবান্ধব আইন বা নীতি প্রণয়ন আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। ব্যবসায়ী লবি গ্রুপ, রাজনৈতিক গোষ্ঠী, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী সংগঠন এবং প্রশাসনিক কাঠামোর অসামর্থ্য—সবকিছুই এই প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
শফিকুল আলম আরও জানিয়েছেন, অনেক সময় সহজ এবং সাধারণ আইনও মাসের পর মাস আটকে থাকে। বিশেষ করে যেসব সংস্কার কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে, সেগুলো বাস্তবায়নে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়। তিনি উল্লেখ করেছেন, এই প্রতিবন্ধকতা শুধুমাত্র নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে নয়, বরং প্রশাসনিক বাস্তবায়ন এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনেও দেখা দেয়।
তার বক্তব্যে বলা হয়েছে, নীতি প্রণয়ন এবং আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে একক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সক্ষমতা সীমিত। তাই সরকারের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার সময় এই জটিলতা ও বহুমুখী চ্যালেঞ্জকে বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে এটি দেশের নীতি নির্ধারণ ও প্রশাসনিক দক্ষতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শফিকুল আলমের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী নীতি প্রণয়ন ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য বাধা চিহ্নিত করার গুরুত্বকেও প্রতিফলিত করে।


