আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দশমবারের মতো শপথ গ্রহণ করেছেন জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-এর প্রেসিডেন্ট নীতিশ কুমার। আজ বৃহস্পতিবার বিহারের রাজধানী পাটনার গান্ধী ময়দানে অনুষ্ঠিত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে মোট ৩০ জন মন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১৬ জন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এবং বাকি ১৪ জন জেডিইউ-র।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার পর এ ধরনের ঘটনা দেশের রাজনীতিতে অনন্য। দেশের কোনো রাজনীতিবিদ এতবার মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করেননি। যদি নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন সরকার আগামী পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করে, তাহলে তিনি বিহারে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়কাল মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার রেকর্ডও স্থাপন করবেন।
বিহারের বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৪৩। এবারের বিধানসভা নির্বাচন দুই দফায়—৬ এবং ১১ নভেম্বর—পরিচালিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দুই দফার ভোটগ্রহণে মোট ৬৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ১৪ নভেম্বর ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল বিজেপি-জেডিইউ নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এবং কংগ্রেস-রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতৃত্বাধীন মহাগাঠবন্ধন জোটের মধ্যে। ফলাফলে দেখা যায়, ২৪২টি আসনের মধ্যে ২০২টিতে জয় পায় এনডিএ জোট। মহাগাঠবন্ধন জোটের প্রার্থীরা ৩৫টি আসনে জয়ী হন।
এনডিএ জোটের মধ্যে সর্ববৃহৎ জয়ী দল বিজেপি, যারা ৮৯টি আসনে জয়লাভ করেছে। জোটের দ্বিতীয় বড় দল জেডিইউ ৮৫টি আসনে বিজয়ী হয়। এছাড়া চিরাগ পাসওয়ানের নেতৃত্বাধীন লোক জনশক্তি পার্টি ১৯টি এবং জিতেন রাম মাঝির নেতৃত্বাধীন আওয়াম মোর্চা পার্টি ৫টি আসনে জয় লাভ করেছে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
নীতিশ কুমারের দশমবারের শপথ গ্রহণ এবং এনডিএ জোটের বিজয় বিহারের রাজনৈতিক মানচিত্রকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। রাজ্যের এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা স্থানীয় উন্নয়ন, নীতি-নির্ধারণ এবং সরকারি কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ মেয়াদি শাসন নীতিশ কুমারের নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং রাজ্যের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্থিতিশীলতা আনতে পারে।


