অর্থনীতি ডেস্ক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি দেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব আইন—মূল্য সংযোজন কর আইন-২০১২, কাস্টমস আইন-২০২৩ এবং আয়কর আইন-২০২৩-এর অথেনটিক ইংরেজি টেক্সট সরকারি গেজেটে প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা-২০১৬-এর ইংরেজি সংস্করণও গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী, গবেষক, বিশ্লেষক এবং বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান এই তিন আইনের নির্ভুল ইংরেজি সংস্করণ না থাকার কারণে নানা জটিলতা ও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছিলেন। বিশেষত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজস্ব আইনের ইংরেজি সংস্করণ অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এবং কাস্টমস এক্ট-১৯৬৯ বাতিলের পর নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে আয়কর আইন ও কাস্টমস আইন প্রবর্তন করা হয়। এরপর থেকেই আইনগুলোর অথেনটিক ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশের দাবি ক্রমবর্ধমান হয়ে ওঠে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময় ধরে আইনের ইংরেজি সংস্করণ প্রস্তুত করেন। এরপর পৃথক কমিটি একাধিক ধাপে এই সংস্করণ রিভিউ করে। চূড়ান্ত সংস্করণ ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে প্রেরণ করা হলে, তারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংশোধন সম্পন্ন করে অনুমোদন প্রদান করেন। পরবর্তীতে বিজি প্রেসে মুদ্রণের মাধ্যমে এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
আইনের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশের ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আইনগুলো সহজে অনুধাবন করতে পারবে। পাশাপাশি, করদাতাদের মধ্যে আইন মেনে চলার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। এনবিআর আশা করছে, এতে রাজস্ব আইন প্রয়োগে অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা দূর হবে এবং দেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের উন্নয়নে সহায়তা বৃদ্ধি পাবে।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশের ফলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্যও আইন বুঝতে সুবিধা হবে এবং সরকারি আয়কর ও কাস্টমস সম্পর্কিত নিয়মাবলীর কার্যক্রমে একরূপতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এনবিআর এই উদ্যোগকে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশকে আরও বিনিয়োগবান্ধব করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছে। এধরণের পদক্ষেপ কর প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।


