জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন শিক্ষার্থীর ওপর মুখোশধারীদের হামলা এবং দুজনকে তুলে নিয়ে মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এই বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে সমবেত হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদে স্লোগান দেন। পরে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়ে বিক্ষোভকে আরও বৃহৎ রূপ দেন। অবরোধের কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনুযায়ী, বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে কাজলা গেটের কাছে একটি খাবার হোটেলে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী আল ফারাবী, তাহমিদ আহমেদ (বখশী) এবং নাট্যকলা বিভাগের মিনহাজ খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলে করে মুখে কালো কাপড় বাঁধা ও হেলমেট পরা একদল দুর্বৃত্ত সেখানে প্রবেশ করে। তারা মিনহাজকে রামদা দিয়ে আঘাত করেন এবং আল ফারাবী ও তাহমিদকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান।
পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে আল ফারাবীকে বিনোদপুর বেতার মাঠের পাশে এবং তাহমিদকে হবিবুর রহমান হলের সামনে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। আহত শিক্ষার্থীদের শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। আহত দুজন বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। আহত শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন। তবে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার জন্য সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং প্রশাসনের তৎপরতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একাধিক শিক্ষার্থী উল্লেখ করেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারা এবং এই ধরনের সহিংসতার পুনরাবৃত্তি রোধ করা জরুরি।
রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের দীর্ঘ সময়ের জন্য অবরোধের কারণে এলাকার যানবাহন চলাচলে ব্যাহত হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন অবরোধের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চলমান রাখার পাশাপাশি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন আলোচনার বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিত নজরদারি ও তৎপর পুলিশি ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজন। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর নীতি ও সচেতনতা মূলক পদক্ষেপও জরুরি।


