পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পে তিনজন নিহত, বহু হতাহত

পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পে তিনজন নিহত, বহু হতাহত

জাতীয় ডেস্ক

রাজধানীর পুরানঢাকার কসাইটুলিতে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে অনুভূত ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কারণে একটি ভবনের রেলিং ভেঙে তিনজন পথচারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কিছু ভবন আংশিকভাবে হেলে পড়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও অনুভূত হয়েছে। একই সময় এই কম্পন ভারতের কিছু অংশেও অনুভূত হওয়ায় এ ঘটনা আঞ্চলিক প্রভাবযুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভূমিকম্পের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার হওয়ায় এটি মাঝারি ধরনের হিসেবে বিবেচিত। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই মাত্রার কম্পন সাধারণত স্থাপনার ক্ষতি সীমিত রাখলেও পুরনো ও দুর্বল নির্মাণকৃত ভবনের জন্য ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে ঢাকার পুরান এলাকায় পুরনো ভবন ও অবকাঠামোর ক্ষেত্রে আংশিক ধস বা হেলনাহেলনা ঘটতে পারে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, হতাহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং উদ্ধারকর্মীরা নিহত ও আহতদের সহায়তা, ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কাজ করছে। তারা শহরের বিভিন্ন অংশে তল্লাশি চালাচ্ছেন এবং নিরাপদ স্থানে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।

বাংলাদেশে ভূমিকম্প সচেতনতা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো নিয়মিতভাবে মধ্যপন্থী ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, নিরাপদ স্থানে অবস্থান ও জরুরি প্রটোকল অনুসরণের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা পুনরায় উল্লেখ করেছেন যে, ভূমিকম্পের পর ছোটখাটো আফটার শকের সম্ভাবনা থাকে, তাই মানুষকে সজাগ ও নিরাপদ অবস্থানে থাকতে হবে।

গত কয়েক বছরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকায় ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল, এবং এর আগে ২৮ মে ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের কাছে কম্পনের প্রভাব দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় অনুভূত হয়েছিল। এসব ঘটনা দেশের ভূ-ভৌগোলিক অবস্থার কারণে ঘটে থাকে, যেখানে উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চল ও রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় কম্পন অনুভূত হওয়া স্বাভাবিক।

স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো সতর্ক করেছেন, কম্পনের সময় উঁচু স্থান নয় বরং খোলা ও নিরাপদ স্থানে অবস্থান করা জরুরি। বিদ্যুতের তার, বড় আসবাবপত্র ও ভাঙনশীল বস্তু থেকে দূরে থাকা এবং জরুরি পরিষেবা সংযোগে থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করান, এ ধরনের ভূমিকম্প নাগরিকদের জন্য সতর্কতার একটি বার্তা। ভবিষ্যতে আরও ছোটখাটো আফটার শক অনুভূত হতে পারে, তবে তা সাধারণত গুরুতর ক্ষতি সৃষ্টি করে না। শহরবাসীকে নিরাপদে অবস্থান ও সচেতন থাকার জন্য সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ