আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার সতর্ক করে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার ফলে ইউক্রেন তার মর্যাদা ও স্বাধীনতা হারানোর পাশাপাশি ওয়াশিংটনের সমর্থনও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিকল্পনায় রাশিয়ার মূল দাবিগুলো প্রধানত স্থান পেয়েছে।
জেলেনস্কি দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, “আমরা এখন খুব কঠিন এক অবস্থার মুখোমুখি। আমাদের হয় মর্যাদা হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে, নয়তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশকে হারানোর ভয় আছে। এটি আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোর একটি।” তিনি আরও জোর দেন, ইউক্রেন কখনোই নিজের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স নিউজ রেডিওকে জানিয়েছেন, কিয়েভকে পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শীতকাল ঘনিয়ে এসেছে এবং রক্তপাত বন্ধ করার জন্য সময় খুব সীমিত। ট্রাম্প উল্লেখ করেন, জেলেনস্কিকে এটি পছন্দ করতে হবে, এবং যদি না পছন্দ করেন, তবে তাঁদের লড়াই চালিয়ে যাওয়াই উচিত।
ওয়াশিংটনের ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে কিছু অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া, সামরিক বাহিনী ও অস্ত্র কমানো, এবং ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, পরিকল্পনায় এমন শর্তও রয়েছে, যা রাশিয়াকে আপত্তি জানাতে বাধ্য করবে এবং মস্কোকে কিছু দখলকৃত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স শুক্রবার জানান, ইউক্রেনে যুদ্ধ সমাপ্তির যে কোনো পরিকল্পনায় ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, যদি ইউক্রেন আরও অর্থ, অস্ত্র বা রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা পায়, তাহলে জয়ের নিশ্চয়তা পাওয়ার ধারণা “অলীক কল্পনা।”
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন পরিকল্পনাকে চার বছরের এই সংঘাতের চূড়ান্ত সমাধানের ভিত্তি হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, কিয়েভ এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে, তবে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার অগ্রগতির বাস্তবতা পুরোপুরি বুঝতে পারছে না।
জেলেনস্কি তার ভাষণে ইউক্রেনীয় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যে, দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য তিনি কোনো আপস করবেন না।


