খেলাধুলা ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এসএ২০-এর নিলামে বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে প্রথমে দলে ভিড়িয়েছিল ডারবান সুপার জায়ান্টস। পরে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাইজুলের জায়গায় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং তারকা কেইন উইলিয়ামসনকে নেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় স্পষ্ট হয়ে যায়, বাংলাদেশি তারকা নিজেই দলে থাকবেন না এবং নিজের নাম সরিয়ে নিয়েছেন।
মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের সংবাদ সম্মেলনে তাইজুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘এখানে (রিপ্লেস করা নিয়ে) আমি অবাক নই। ওটা আমি নিজের থেকেই রিলিজ করেছি, কারণ আমার একটি ব্যক্তিগত বিষয় ছিল।’ এ বক্তব্যে বোঝা যায়, ব্যক্তিগত কারণে নিজ উদ্যোগে তিনি দলের বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও তার সহকর্মী সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং রেকর্ডের প্রসঙ্গেও। সাকিব টেস্টে সর্বোচ্চ ২৪৬ উইকেট নিয়ে দেশের শীর্ষ বোলারের মধ্যে ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক ম্যাচে তাইজুলও সমান উইকেট সংগ্রহ করে সাকিবকে ছুঁয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘আসলে জিনিসটা এমন না। যখন ন্যাশনাল টিমে খেলবেন, তখন সবসময় পারফর্ম করতে হবে। এটা পারফরম্যান্সের জায়গা। আর আমি সাকিব ভাইকে কী দিতে পেরেছি, সেটা কোনো মূল বিষয় নয়।’
তিনি সাকিব আল হাসানের অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার প্রশংসা করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘সাকিব ভাই যতদিন ছিলেন, বাংলাদেশ দলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। আমাদের মতো খেলোয়াড়দের মধ্যে উনার অভিজ্ঞতা ছিল বেশি। উনি দীর্ঘদিন দেশের হয়ে বিশ্বের এক নম্বর অবস্থানে ছিলেন। একজন মানুষ এমনি এমনি সেই অবস্থানে পৌঁছাতে পারেন না। অবশ্যই উনার মধ্যে বিশেষ কিছু গুণ ও কোয়ালিটি ছিল।’
তাইজুল আরও জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি ওই গুণাবলীগুলো গ্রহণ করার জন্য এবং উনি সবসময় আমাদের সাজেশন দিতেন। উনার অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু পারি, আলোচনা করি যে আমরা কীভাবে আরও এগোতে পারি।’ তিনি প্রথম ইনিংসে আইরিশ দলের বিরুদ্ধে চারটি উইকেট নেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন।
এই পদক্ষেপ এবং পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তাইজুল ইসলাম তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন। টেস্টে সাকিবের রেকর্ডের সঙ্গে সমান হওয়ার পাশাপাশি, অভিজ্ঞতার আলোকে দলের পরবর্তী পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সম্ভাবনা উন্মোচিত হচ্ছে। এছাড়া, ব্যক্তিগত কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা বাংলাদেশি ক্রিকেট মহলে নজরকাড়া এক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তাইজুলের এই কার্যক্রম স্পষ্ট করছে, জাতীয় দলের পারফরম্যান্স এবং ব্যক্তিগত অঙ্গীকারের মধ্যে একটি সুক্ষ্ম ভারসাম্য রয়েছে। এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বাংলাদেশি ক্রিকেটে তার প্রভাবশালী অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে এবং তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করেছে।


