রাজনীতি ডেস্ক
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রস্তুতি ও সাংগঠনিক অবস্থান তুলে ধরে বলেছেন, মাঠপর্যায়ে দলঘনিষ্ঠ মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য এবং নির্বাচনী কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণই দলটির মূল শক্তি হবে। শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর কে ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণে আয়োজিত নির্বাচনী উঠান বৈঠকে তিনি এ বক্তব্য দেন।
বৈঠকে এ্যানি চৌধুরী বলেন, নির্বাচনী পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দেখা গেলেও বিএনপি গণমুখী কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করবে। তিনি দাবি করেন, দলীয় অবস্থান শক্তিশালী রাখতে এবং স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারণা পরিচালনায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে। তার বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনী মাঠে মোটরসাইকেল র্যালি বা অনুরূপ প্রদর্শনীর পরিবর্তে জনগণের সক্রিয় উপস্থিতিই প্রতিফলিত করবে দলীয় সমর্থন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বহিরাগত চাপ বা বাইরের সংগঠনের মাধ্যমে জনসমাগম সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে তা নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে। এ্যানির মতে, নির্বাচনী প্রচারণায় যেকোনো ধরনের অপ্রয়োজনীয় প্রদর্শনী বা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ভোটারদের অংশগ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি ও শান্তিপূর্ণ প্রচারণা বজায় রাখতে দলীয় নেতাকর্মীদের সচেতনভাবে অংশ নিতে হবে।
বিএনপির এই প্রার্থী আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো পক্ষের কর্মসূচিতে মোটরসাইকেল ব্যবহারের বিষয়টি স্থানীয় জনগণের মাঝে প্রশ্ন তৈরি করতে পারে। নির্বাচনকালীন সময়ে পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সহনশীলতা ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে প্রচারণায় অংশগ্রহণের সময় জননিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সতর্কতা বজায় থাকে।
এ্যানি চৌধুরী তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন যে, দলীয়ভাবে তারা অতীতে সংঘাতমুখী রাজনীতি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছে এবং আগামীতেও একই নীতি বজায় রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। তার দাবি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অপ্রয়োজনীয় শোরগোল বা উত্তেজনা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল প্রচারণায় জনগণের সাড়া পাওয়া সহজ হবে। তিনি বলেন, ভোটাররা যাতে নিরাপদ পরিবেশে নির্বাচনী কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সব পক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা জরুরি।
এসময় তিনি স্থানীয় পর্যায়ের সংগঠনের কার্যক্রম শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তার মতে, নির্বাচনের সময়基层 পর্যায়ে সমন্বয় জোরদার না হলে প্রচারণায় কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া কঠিন। মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা দলীয় অবস্থান সুসংহত করতে সহায়তা করবে। বিশেষ করে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বৈঠকে বক্তারা নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে স্থানীয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করেন সাধারণ মানুষ। এজন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সবাইকে দায়িত্বশীলভাবে আচরণ করা উচিত। স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক কার্যক্রম যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সে বিষয়ে তারা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করেন।
সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি, ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং প্রচারণার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। নেতারা জানান, নির্বাচনী মাঠে গণসংযোগ বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণির মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করার পরিকল্পনা ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত নেতাদের মতে, আগামী নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করা এবং ভোটারদের উদ্বেগ ও প্রত্যাশা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া দলীয় প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তারা আশা করেন, ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণই নির্বাচনী পরিবেশকে আরও গণতান্ত্রিক করে তুলবে।


