জেলা প্রতিনিধি
ভূমিকম্পে নরসিংদীর গাবতলি এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল চাপা পড়ে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার দেলোয়ার হোসেন উজ্জ্বল (৩৮) এবং তার ছেলে ওমর (৯) নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের একটি বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেলোয়ার ও তার পরিবার চাকরিজনিত কারণে নরসিংদী শহরের গাবতলি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শুক্রবার সকালে ভূমিকম্পের সময় পাশের বাসার দেয়াল ধসে তাদের ওপর পড়ে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে চিকিৎসকরা বাবা–ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় দেলোয়ারের দুই মেয়ে ও ছেলে গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাদের নরসিংদী সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ছেলে ওমরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলোয়ারও মারা যান। দেলোয়ার বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনে উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। তার ছেলে ওমর নরসিংদীর একটি মাদরাসার হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করছিল।
নিহতের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, তার বড় ভাই অত্যন্ত সদয় ও দায়িত্বশীল ছিলেন। নিহত দেলোয়ারের দুই কন্যা আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রিত ইউএমসি জুট মিলসের উপমহাব্যবস্থাপক আবুল কাশেম মো. হান্নান বলেন, দেলোয়ার আমাদের প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বশীলভাবে কর্মরত ছিলেন এবং আমরা দাফন-কাফনে সহযোগিতা করেছি। এছাড়া তার প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ দ্রুত প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতরা পাকুন্দিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোক নেমে এসেছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। কিশোরগঞ্জে শক্ত ঝাঁকুনিতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও অন্য কোনো দূর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।


