খালেদা জিয়ার হার্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণ, নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা চলছে

খালেদা জিয়ার হার্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণ, নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা চলছে

জাতীয় ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হার্ট এবং ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং বর্তমানে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোববার (২৩ নভেম্বর) রাত ৮টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তার স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তৎক্ষণাৎ ভর্তি করা হয়।

মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং তার দীর্ঘস্থায়ী হার্ট সমস্যা থাকায় হার্ট এবং ফুসফুস একসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ায় শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। তার হার্টে পারমানেন্ট পেসমেকার আছে এবং মাইট্রোস্টেনোসিস নামে একটি অবস্থার কারণে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। ভর্তি হওয়ার পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন এবং প্রাথমিকভাবে এন্টিবায়োটিকসহ চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া বর্তমানে ২৪ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং তদনুযায়ী চিকিৎসা পরিকল্পনা সংশোধন করা হবে। তিনি হাসপাতালে কেবিনে রয়েছেন এবং সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা ও মনিটরিং পাচ্ছেন।

মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. জিয়াউল হক, ডা. মামুন আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম। লন্ডন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভার্চুয়ালি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও অংশগ্রহণ করেন। অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী জানান, বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে।

অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রতি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বোর্ড প্রাথমিক চিকিৎসা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনবে। এছাড়া তার পরিবার—ছেলে তারেক রহমান, সহধর্মিনী জুবাইদা রহমান, এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিনী সৈয়দা শামিলা রহমান—তার সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছেন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সহযোগিতা করছেন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান তিনি। ১১৭ দিনের চিকিৎসার পর ৬ মে দেশে ফেরেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার জটিল শারীরিক অবস্থার কারণে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসার ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ।

মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্য অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা সতর্কভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পরিবারের সদস্যরা ও চিকিৎসকরা তার সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।

জাতীয়