জামায়াতের কাছে ২০০ আসন চায় ইসলামী আন্দোলন

জামায়াতের কাছে ২০০ আসন চায় ইসলামী আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান নির্বাচনী সমঝোতায় অংশগ্রহণকারী আট দলের মধ্যে সংখ্যাগতভাবে বৃহত্তম দল হিসেবে অবস্থান করছে জামায়াতে ইসলামী। অতীতে দলটি থেকে একাধিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। অপরদিকে, কওমি মাদ্রাসা ঘরানা ও তাবলিগ জামাতের বড় অংশের সমর্থন থাকা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় রয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, দলটি সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো জামায়াতের সমানসংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়া। ৩০০ আসনের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ২০০ আসনে আমরা নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী মনে করি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, চূড়ান্ত প্রার্থী সংখ্যা ও আসন বণ্টন শেষ পর্যন্ত জোটগত সমঝোতার ওপর নির্ভর করবে। প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা ও স্থানীয় প্রভাব জোটের জন্য আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।

জামায়াতের কয়েকটি সূত্র জানায়, তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২০০–এর বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী এবং সারাদেশে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী অবস্থানে দেখতে চায়। দলটি এ নির্বাচনে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল’ গঠনের কথাও জানিয়েছে। গত অক্টোবর খুলনার এক সমাবেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “সমঝোতার কারণে প্রয়োজন হলে কিছু আসন ছাড় দিতে হতে পারে, কিন্তু অন্তত ২০০ আসনে আমরা প্রার্থী দেব।”

জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণ শাখার শুরা সদস্যরা জানিয়েছেন, সমঝোতার আলোকে ২৩৩–২৪০ আসনের মতো এলাকায় প্রার্থী বণ্টন নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তবে চূড়ান্তভাবে প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০০ আসনে সীমিত হতে পারে। দলটি তার সর্বোচ্চ সংগঠনগত শক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচনী মাঠে প্রার্থীকে সমর্থন করবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ বলেন, দলের প্রায় ১৫০ আসনে ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “কত আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়, তবে যেখানে যে দলের প্রার্থী থাকবে, আট দলের কর্মী একসঙ্গে কাজ করবে।” তিনি আরও জানান, দলের অভ্যন্তরে প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে, কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জোটগত আলোচনার ওপর নির্ভর করছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের জানান, প্রার্থী বণ্টন সর্বোচ্চ সমঝোতার ভিত্তিতে করা হবে। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরের শুরুতেই আমরা যৌথভাবে প্রার্থী ঘোষণা করতে চাই। আসন সংখ্যার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কোন আসনে জয়ের মতো জনসমর্থন ও সক্ষমতা রয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন, যে দল থেকেই প্রার্থী দেওয়া হোক না কেন, দল মাঠে সেই প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে এবং প্রয়োজনে নির্বাচনী ব্যয়ও ভাগাভাগি করা হবে।

এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মধ্যে আসন বণ্টন ও সমঝোতা দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতা কেন্দ্রিক কৌশলকে প্রতিফলিত করছে। জোটগত সমঝোতার মাধ্যমে দলগুলো নিজেদের নির্বাচনী প্রভাব বাড়াতে এবং নির্বাচনে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট।

রাজনীতি