পাকুন্দিয়ায় পিকআপভ্যান–অটোরিকশা সংঘর্ষে ৭ জন আহত

পাকুন্দিয়ায় পিকআপভ্যান–অটোরিকশা সংঘর্ষে ৭ জন আহত

 

জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার গাজীপুর–কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে পিকআপভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কৌদালিয়া পেট্রোল পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় জানা না গেলেও সবাইকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, গার্মেন্টসের ঝুট কাপড় বহনকারী একটি পিকআপভ্যান কিশোরগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। একই সময়ে কিশোরগঞ্জ থেকে গাজীপুরগামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শিশুসহ ছয় থেকে সাতজন যাত্রী ছিলেন। মহাসড়কের পেট্রোল পাম্প এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এর যাত্রীরা গুরুতর আহত হন।

দুর্ঘটনার পরপরই পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাখাওয়াৎ হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিজস্ব সরকারি গাড়িতে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। সংঘর্ষের কারণে মহাসড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল ব্যাহত হলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে সড়কে পুনরায় যান চলাচল নিশ্চিত করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে অটোরিকশাটি মুহূর্তেই দুমড়ে-মুচড়ে যায়। স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধার কাজে এগিয়ে এলেও দুর্ঘটনার পরপরই দ্রুত কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া না যাওয়ায় থানার গাড়ি ব্যবহার করে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আহতদের সবাই গুরুতর অবস্থায় ছিলেন এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল।

পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক মশিউর রহমান জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার ফলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সব যাত্রী গুরুতর আহত হন। আহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ ঘটনাসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে এবং পিকআপভ্যানের চালক ও সংশ্লিষ্টদের পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে।

স্থানীয়দের মতে, গাজীপুর–কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাকুন্দিয়া অংশটি দিয়ে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক যানবাহন চলাচল করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কের কিছু অংশে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো ও সড়কশৃঙ্খলা না মানার কারণে এই এলাকায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। পেট্রোল পাম্পসংলগ্ন স্থানে নিয়মিত যানজট ও অসাবধানতার কারণে ঝুঁকি আরও বাড়ে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চালকদের প্রশিক্ষণ ঘাটতি, অতিরিক্ত গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, যানবাহনের ত্রুটি এবং সড়কে পর্যাপ্ত নজরদারির অভাব এসব দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মহাসড়কে নিয়মিত ট্রাফিক নজরদারি, সড়কবাতি, সাইনেজ, গতিনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বৃদ্ধি, এবং চালকদের সুরক্ষা সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানো গেলে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কারণ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের অবস্থার ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

দুর্ঘটনা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ চলছে। পুলিশ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে ঘটনাটির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক রিপোর্ট দেবে।

সারাদেশ