ভুটানের উদ্দেশ্যে ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চালান খালাস

ভুটানের উদ্দেশ্যে ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চালান খালাস

 

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

ভুটান থেকে দুই মাস আগে চট্টগ্রাম বন্দরে আগত ট্রানজিট পণ্যের প্রথম চালানের খালাস প্রক্রিয়া আজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ অনুমোদন প্রক্রিয়ার পর সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সম্মতিসাপেক্ষে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। পরীক্ষামূলক এই চালানে রয়েছে ৬ হাজার ৫৩০ কেজি চকলেট, শ্যাম্পু এবং পাম ফলজাতীয় পণ্য। খালাস প্রক্রিয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের মাশুলের পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছে ১০ হাজার ২৩৪ টাকা।

প্রথম চালানটি রপ্তানি করেছে থাইল্যান্ডের অ্যাবিট ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, আর ভুটান থেকে আমদানি করেছে ভুটানের এবিট ট্রেডিং। চালানটি থাইল্যান্ডের ল্যাম চাবাং বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়ার পর এটি সড়কপথে বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরের মাধ্যমে শিলিগুড়ি পৌঁছাবে এবং সেখান থেকে ভুটানের ফুয়েন্টশোলিং স্থলবন্দরে যাবে।

ভুটানে কোনো সমুদ্রবন্দর না থাকায় তারা তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করতে বাধ্য। বাংলাদেশের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক এই ট্রানজিট চালান নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট’ চুক্তি এবং প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় গত ২২ সেপ্টেম্বর এই চালানটি বাংলাদেশি পতাকাবাহী ‘এমভি এইচআর হিরা’ জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।

এন এম ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল আলম খান জানান, মাশুল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর) সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় খালাস অনুমোদন পেতে কিছুটা সময় লেগেছে। তিনি আরও জানান, “চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের পর চালানটি বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরে পৌঁছাবে। সেখান থেকে শিলিগুড়ি হয়ে ভুটানে পৌঁছে যাবে।”

পরীক্ষামূলক এই চালানটি দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে ট্রানজিট বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, নিয়মিতভাবে এই রুট ব্যবহারে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। এছাড়াও ভারতীয় পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার কনটেইনার এবং পণ্য পরিবহনে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

এই প্রক্রিয়ার সফল বাস্তবায়ন ভুটান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে লজিস্টিক্স এবং ট্রানজিট নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করার পাশাপাশি রপ্তানি ও আমদানি পণ্যের সময় ও খরচ কমাতে সহায়ক হবে। ভবিষ্যতে ভুটানের পণ্য বাংলাদেশ ও ভারতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

জাতীয়