আইন আদালত ডেস্ক
চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকালে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মামলার চারজন আসামির মধ্যে বিজিবির কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ বাকি তিন আসামির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ এই শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এদিন পলাতক দুই আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর এ মামলায় শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে তা স্থগিত করে আজকের জন্য নির্ধারণ করা হয়। এর আগে, ২৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেল এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। ওই দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় চার আসামির মধ্যে বর্তমানে দুজন কারাগারে রয়েছেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম এবং বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
পলাতক দুই আসামি হলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান। তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক চার্জশীট দাখিলের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
২০১৮ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের আন্দোলনের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা দেখা যায়। রামপুরায় এই সময় ২৮ জন নিহত হন এবং আরও অনেকে আহত হন। অভিযানের সময় রামপুরায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুলকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি ছুঁড়তে দেখা যায়। এছাড়া মামলায় উল্লেখিত অন্য আসামিরাও নেতৃত্ব দিয়েছেন হত্যাযজ্ঞে।
এ ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে চারজনের বিরুদ্ধে আলাদা ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয়। তার আগে তদন্ত সংস্থা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। মামলার কার্যক্রমের পরবর্তী ধাপ হিসেবে আজকের শুনানি এই চার্জশীটের কার্যকরিতা এবং পলাতক আসামিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এই মামলার শুনানি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


