অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সম্ভাব্য সূচি চূড়ান্ত পর্যায়ে, প্রস্তুতি শুরু করছে বাংলাদেশ

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সম্ভাব্য সূচি চূড়ান্ত পর্যায়ে, প্রস্তুতি শুরু করছে বাংলাদেশ

 

খেলাধুলা ডেস্ক

আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, যেখানে অংশ নেবে বাংলাদেশসহ আটটি দল। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পূর্ণ সূচি প্রকাশ করা হয়নি, তবে টুর্নামেন্টের সময়সূচি, দলবণ্টন ও ম্যাচ-তারিখ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে।

এই প্রতিযোগিতা আগামী ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টুর্নামেন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অংশ নেবে পাঁচটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ—বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। এর বাইরে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সহযোগী সদস্য দেশগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বাছাইপর্ব থেকে উঠবে আরও তিনটি দল। এভাবে মোট আটটি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করে ম্যাচ আয়োজন করা হবে।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাছাইপর্বে শীর্ষস্থান অধিকারী দেশ এবং তৃতীয় স্থানে থাকা দলকে রাখা হবে ‘এ’ গ্রুপে, যেখানে তাদের সঙ্গী হবে ভারত ও পাকিস্তান। অপরদিকে ‘বি’ গ্রুপে খেলবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান; তাদের সঙ্গে যুক্ত হবে বাছাইপর্বের দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল। গ্রুপভিত্তিক লড়াই শেষে প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশ দলের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ-সূচি সম্পর্কে প্রাথমিক যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায়, ১৩ ডিসেম্বর টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তুলনামূলক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এই ম্যাচটি গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ দুই দলই নিয়মিতভাবে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলে থাকে।

এরপর ১৫ ডিসেম্বর বাছাইপর্বের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা দলের বিপক্ষে খেলবে আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর অথবা এগিয়ে যাওয়ার নির্ধারক হতে পারে, কারণ অপরিচিত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সবসময়ই আলাদা গুরুত্ব বহন করে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ১৭ ডিসেম্বর মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নিয়মিত শক্তিশালী দল শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এই ম্যাচটি গ্রুপ অবস্থান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল তাদের প্রস্তুতি পরিকল্পনা আরও জোরদার করেছে। আজ (মঙ্গলবার) থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু করছে দল। এই ক্যাম্পে খেলোয়াড়দের দক্ষতা, ফিটনেস, ম্যাচ পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, এবং দলগত কৌশল নিয়ে বিস্তৃত অনুশীলন পরিচালিত হবে। কোচিং স্টাফরা জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল অতীতে একাধিকবার মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে। বিশেষ করে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে দলের ধারাবাহিক উন্নতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করেছে। সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে ব্যাটিং অর্ডারে স্থিতিশীলতা, স্পিন বিভাগে কার্যকারিতা এবং পেস বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্য বাংলাদেশের শক্তির জায়গা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একই সঙ্গে দলগত সমন্বয় ও ম্যাচ ধরে রাখার সক্ষমতা বাড়ানোও এই ক্যাম্পের প্রধান লক্ষ্য।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবহাওয়া, পিচের প্রকৃতি এবং স্থানীয় কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে খেলোয়াড়দের আলাদা প্রস্তুতি দরকার হবে। সাধারণত আমিরাতের উইকেট ব্যাটসম্যান-বান্ধব হলেও ম্যাচের শেষ দিকে স্পিনারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণকে সামনে রেখে কৌশল নির্ধারণ করা হতে পারে। মৃদু শীতকালীন আবহাওয়া সত্ত্বেও শুষ্কতা ও খেলার সময়ের তাপমাত্রা বিবেচনায় ফিটনেসের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করার পরিকল্পনা রয়েছে দলের ক্যাম্পে।

এশিয়া কাপের মতো বড় টুর্নামেন্ট বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের বড় সুযোগ তৈরি করে। বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিপক্ষে খেলা তরুণ ক্রিকেটারদের মানসিক দৃঢ়তা ও ম্যাচ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে। বাংলাদেশ দল আগামী কয়েক সপ্তাহের প্রস্তুতিকে কাজে লাগিয়ে টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পারফরম্যান্স প্রদর্শনের লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে।

এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ বাংলাদেশের তরুণদের জন্য দক্ষতা মূল্যায়ন, দলগত সংহতি এবং ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে। দল ব্যবস্থাপনা আশা করছে, প্রস্তুতি ক্যাম্প থেকে শুরু করে ম্যাচ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পরিকল্পিত অনুশীলন ও কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দল একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে।

খেলাধূলা