জাতীয় ডেস্ক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন আজ মঙ্গলবার ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে উপস্থিত হয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সময় শতভাগ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি সকল দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি আহ্বান জানান, যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করবেন, তারা কমিশনের নীতিমালা ও আইন অনুযায়ী আচরণ নিশ্চিত করবেন এবং নিজেদের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবেন।
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের একটাই এজেন্ডা—জাতিকে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া। তাই সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করা সকলের জাতীয় দায়িত্ব।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, কমিশনের নিজস্ব সুপারভাইজারি মেকানিজম ও অফিসিয়াল মেকানিজম থাকলেও পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের প্রতিটি স্তর সরাসরি দেখবেন এবং রিপোর্ট করবেন। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমের যথাযথ বাস্তবায়ন মনিটর করবেন। এতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা, প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশের দায়িত্বপালন, ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং ভোটারের প্রতি কোনো প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে কিনা, এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব হবে অবলোকন ও রিপোর্ট করা; নির্বাচনে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ নয়।
সিইসি আরও বলেন, যারা নির্বাচনী পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত হবেন, তাদেরকে নির্বাচন সংক্রান্ত দলীয় প্রচার-প্রচারণা থেকে দূরে থাকতে হবে এবং জনগণকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারবে না। তিনি বলেন, “আপনাদের সহযোগী হিসেবে পেতে চাই। আমরা জাতিকে ওয়াদা দিয়েছি একটি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার। কিন্তু এটি একা ইলেকশন কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই।”
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার উল্লেখ করেন, নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি, ভোট কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, প্রচারকালীন কার্যক্রম এবং অন্যান্য প্রশাসনিক বিষয় পর্যবেক্ষণ পর্যবেক্ষকদের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে। তিনি বলেন, “প্রতিটি রিপোর্ট হতে হবে শতভাগ সত্যনির্ভর। কারণ এই রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন পরিচালনার নানা পদক্ষেপ।”
এছাড়া তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনায় কোনো ত্রুটি বা বিচ্যুতি থাকলে সেটি সংশোধন করা হবে এবং পর্যবেক্ষকরা এই বিষয়েও সুপারিশ দিতে পারবেন। তিনি স্বচ্ছ ও ভোটারবান্ধব পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সংলাপে নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমেদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।


