প্রবাসীদের ডাকযোগে ভোট নিবন্ধনে আগ্রহ বৃদ্ধি, ২৯ হাজারের বেশি আবেদন

প্রবাসীদের ডাকযোগে ভোট নিবন্ধনে আগ্রহ বৃদ্ধি, ২৯ হাজারের বেশি আবেদন

জাতীয় ডেস্ক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ডাকযোগে ভোট প্রদানের সুযোগ পেতে বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আগ্রহ দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য অনুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ২৯ হাজার ১০০ প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। নিবন্ধন শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সকল প্রবাসীর ঠিকানায় ডাকযোগে ব্যালট পেপার পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।

ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, চলমান নিবন্ধন কার্যক্রমটি অঞ্চলভেদে বিভিন্ন ধাপে পরিচালিত হচ্ছে। ১৯ নভেম্বর থেকে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে, যা ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। অন্যদিকে, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে একই তারিখে শেষ হবে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারী প্রবাসীরা ডাকযোগে ভোট প্রদানের সকল সুযোগভুক্ত হবেন।

বর্তমানে যেসব দেশে নিবন্ধন সুযোগ চালু রয়েছে তার তালিকায় রয়েছে—দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, হংকং, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, যুক্তরাষ্ট্রসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা, মরক্কো এবং মধ্য আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশ। এসব দেশ থেকে ২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৯ হাজার ১০০ প্রবাসী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন বলে ইসির প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্য থেকে জানা যায়।

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী এ কার্যক্রম আরও ধাপভিত্তিকভাবে চলবে। সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য ৪ থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় নির্ধারিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ৯ থেকে ১৩ ডিসেম্বর এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে (সৌদি আরব ব্যতীত) ১৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ থাকবে। দেশে অবস্থানরত বিশেষ শ্রেণির ভোটার—যেমন ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, সরকারি চাকরিজীবী, কারাবন্দি ও বিদেশে বসবাসরত অন্যান্য ভোটারদের জন্য ১৯ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

ডাকযোগে ভোট প্রদান প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। তারা ভোট প্রদান করে নির্দিষ্ট ফিরতি খামে তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে প্রেরণ করতে পারবেন। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোট সংগ্রহ ও গণনা সম্পন্ন হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রবাসীদের ভোট অংশগ্রহণ আরও সহজ ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুশৃঙ্খল করতে ডিজিটাল পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সংস্থাটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোট ৫০ লাখ প্রবাসী ভোটারকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন মহল ও দূতাবাসসমূহের সঙ্গে সমন্বয় করে নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

ডাকযোগে ভোট প্রদান দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় একটি নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে দেশের বাইরে অবস্থানরত ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচন ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্তি ও প্রযুক্তির ব্যবহার আরও প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে এই প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে আরও অধিক প্রবাসীকে ভোট প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে সহায়ক হবে এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার বহুমাত্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ