জেলা প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারের কাজের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নজরুল ইসলাম (৪৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় রাজ্জাক ও করিম নামে আরও দুই শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ঘটনা বুধবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের ৬নং ওয়ার্ডের মুনলাইট গার্মেন্টস সংলগ্ন রাস্তায় ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার আব্দুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ১২-১৩ জন শ্রমিক ট্রান্সফর্মারের কাজ করছিলেন। ওই সময় বিদ্যুতের লাইন বন্ধ রাখার কথা থাকলেও হঠাৎ লাইন চালু হয়ে যাওয়ায় নজরুলসহ তিনজন শ্রমিক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই নজরুল ইসলাম মারা যান এবং দুইজন গুরুতর আহত হন।
আদমজী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মিরন মিয়া জানান, তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে খানপুর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আহতদের স্থানীয়রা আগেই হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, নিহত শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। গুরুতর আহত দুই শ্রমিককে মুমূর্ষু অবস্থায় খানপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কাজ চলাকালীন শ্রমিকরা ট্রান্সফর্মারের লাইনের সংযোগ পরীক্ষা করছিলেন। হঠাৎ বৈদ্যুতিক লাইনের সক্রিয় হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এটি স্থানীয় কর্মস্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঠিকাদারের দায়িত্ব ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা মান নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হত্যার পর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালের সঙ্গে সমন্বয় রাখা হয়েছে।
নজরুল ইসলামের মৃত্যু ও আহতদের অবস্থার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এ ঘটনার ফলে স্থানীয় শ্রমিকদের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈদ্যুতিক কাজের সময় যথাযথ নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।