৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, জানুয়ারিতে প্রিলিমিনারি

৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, জানুয়ারিতে প্রিলিমিনারি

জাতীয় ডেস্ক

সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৫০তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বুধবার ২৬ নভেম্বর বিকেলে প্রকাশিত এ বিজ্ঞপ্তিতে ২০২৬ সালের শুরু থেকে বিসিএসের বিভিন্ন ধাপের পরীক্ষার সময়সূচি ও নিয়োগসংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলিয়ে মোট ২ হাজার ১৫০ পদে নিয়োগের লক্ষ্যে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৫০তম বিসিএসে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে এক হাজার ৭৫৫ জনকে এবং নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে আরও ৩৯৫ জনকে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি আয়োজিত হবে। এর পর ৯ এপ্রিল থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে এবং মৌখিক পরীক্ষা ১০ আগস্ট থেকে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রার্থীরা ৪ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন জমা দিতে পারবেন এবং আবেদন ফি পরিশোধের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।

বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষা দেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ সরকারি নিয়োগব্যবস্থাগুলোর একটি। সাধারণত তিন ধাপে—প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক—পরীক্ষা নিয়ে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও পিএসসি ধাপে ধাপে সময়সূচি ঘোষণা করেছে, যাতে প্রার্থীরা প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় পান। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও মানসিক দক্ষতা যাচাই করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় বিষয়ভিত্তিক গভীর জ্ঞান মূল্যায়ন করা হয়, আর মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান, আচরণগত দক্ষতা ও প্রার্থীর সামগ্রিক যোগ্যতা যাচাই করা হয়।

৫০তম বিসিএসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদ থাকায় বিভিন্ন পেশাগত ক্যাডারে নতুন নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্র, কর, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্যাডারে আসন বরাদ্দ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিয়োগসংখ্যা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অনেক প্রার্থী এটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন। পিএসসির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মধ্য দিয়ে আগামী বছরের সরকারি চাকরির বড় নিয়োগচক্র আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

পিএসসি জানিয়েছে, আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনকারীদের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্য পূরণ, প্রয়োজনীয় নথি জমা এবং টেলিটকের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে হবে। আবেদন ফি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রার্থীদের ছবি, স্বাক্ষর এবং অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে আপলোড করার নির্দেশনাও বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া হয়েছে, যা আবেদন যাচাই ও পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপে প্রয়োজন হবে।

দেশজুড়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ প্রার্থী বিসিএসের বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। প্রতিযোগিতা বাড়ার ফলে প্রার্থীদের প্রস্তুতিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সময়সূচি যথাসময়ে প্রকাশ হওয়ায় প্রার্থীরা তাদের প্রস্তুতি কৌশল নির্ধারণ করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে বিসিএস ব্যবস্থা চালু হয়েছে কয়েক দশক আগে। প্রতি বছর বিভিন্ন দপ্তরের শূন্যপদ অনুসারে বিসিএস আয়োজন করা হয়। ৫০তম বিসিএসের ক্ষেত্রে নিয়োগসংখ্যা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সরকারি বিভিন্ন খাতে জনবল ঘাটতি পূরণে এটি ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারে নতুন নিয়োগে সেবার মান উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আগামী কয়েক মাসে প্রিলিমিনারি থেকে মৌখিক পরীক্ষা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রার্থীদের বাছাই করা হবে। প্রতিটি ধাপে পিএসসি সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা প্রদান করবে এবং পরীক্ষাকেন্দ্র, সময়সূচি ও ফল প্রকাশ ধাপে ধাপে জানানো হবে। প্রার্থীদের সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৫০তম বিসিএসের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হলো, যা ২০২৬ সালের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে। আয়োজন সম্পন্ন হলে বিভিন্ন ক্যাডারে নতুন নিয়োগ দেশের সরকারি সেবা কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ