লাইফ স্টাইল ডেস্ক
অনেকে জীবনে এমন মানুষ বা ঘটনা সঙ্গে পরিচিত হন, যাকে বা যা ভুলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব মনে হয়। আমাদের মস্তিষ্ক স্মৃতিগুলো সংরক্ষণ করে রাখে, তাই কোনো স্মৃতি পুরোপুরি মুছে ফেলা খুব কঠিন। তবে স্মৃতির প্রভাব কমানো, আবেগের তীব্রতা হ্রাস এবং মনোযোগ অন্যদিকে সরানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞ মনোবিজ্ঞানীরা কিছু কার্যকর কৌশল প্রস্তাব করেছেন, যা অনুসরণ করলে ধীরে ধীরে মনকে শান্ত রাখা যায় এবং অতীত স্মৃতির চাপ কমানো যায়।
প্রথমত, স্মৃতিচিহ্নগুলো সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন। পুরনো ছবি, উপহার বা অন্য কোনো জিনিস যা আপনাকে অতীত স্মৃতির দিকে টানে, তা মুছে ফেলুন। পাশাপাশি জার্নালিং বা লেখালেখি করা উপকারী। নিজের অনুভূতি ও চিন্তাগুলো লিখে রাখলে মন হালকা হয় এবং স্মৃতিগুলোকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়।
দ্বিতীয়ত, নতুন কাজে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। নতুন কোনো শখ বা সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। যেমন- ছবি আঁকা, গান শেখা বা অন্যান্য সৃজনশীল কার্যকলাপ। এতে মনকে অতীত থেকে সরিয়ে আনতে সাহায্য হয় এবং ধীরে ধীরে বর্তমানের উপর মনোযোগ বাড়ে।
তৃতীয়ত, জোর করে কিছু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। কোনো স্মৃতি স্বাভাবিকভাবে আসে বা যায়। জোর করে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তা আরও বেশি মনে পড়তে পারে। তাই পরিস্থিতি গ্রহণ করুন এবং নিজের মনকে সময় দিন।
চতুর্থত, নতুন সম্পর্ক তৈরি ও সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান, নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হন এবং সম্পর্কের জাল বিস্তৃত করুন। এটি মানসিক সমর্থন বৃদ্ধি করে এবং অতীত স্মৃতির ওপর মনোযোগ কমায়।
পঞ্চমত, মানসিক কল্পনার কৌশল ব্যবহার করা যায়। চোখ বন্ধ করে কল্পনা করুন যে আপনি একটি দরজার সামনে দাঁড়িয়েছেন, যার ওপাশে অতীত ঘটনা বা ব্যক্তি আছে। কল্পনায় সেই দরজা বন্ধ করে দিন এবং নিজের বর্তমান জীবনে মনোযোগ দিন। এই প্রক্রিয়ায় মস্তিষ্ক বুঝতে শেখে যে অতীত স্মৃতি বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এই ছয়টি কৌশল নিয়মিতভাবে প্রয়োগ করলে ধীরে ধীরে অতীত স্মৃতির তীব্রতা হ্রাস পায়। মনকে নতুন অভিজ্ঞতা ও ইতিবাচক দিকের দিকে মনোনিবেশ করানো সম্ভব হয়। মনোবিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন, স্মৃতি পুরোপুরি মুছে ফেলা সম্ভব না হলেও, এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করে ব্যক্তিগত মানসিক শান্তি অর্জন করা যায় এবং জীবনের বর্তমান মুহূর্তগুলোতে মনোযোগ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়।
স্মৃতির সঙ্গে সংহতি বজায় রেখে এবং সৃজনশীল ও সামাজিক কার্যকলাপের মাধ্যমে মানুষ অতীতের চাপ কমাতে পারে, যা মানসিক সুস্থতা ও স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক।


