বিনোদন ডেস্ক
বলিউডের সুপরিচিত অভিনেতা অক্ষয় কুমারের শুরুর দিকের ক্যারিয়ার ছিল এক কঠিন ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময়। ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে একাধিক ফ্লপ ছবির কারণে তিনি প্রকাশ্যভাবে উপহাস ও অবমূল্যায়নের শিকার হয়েছিলেন। পরিচালক সুনীল দর্শনের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে জানা যায়, এই সময় অক্ষয় কেবল পেশাগতভাবে নয়, মানসিকভাবেও মারাত্মক চাপে ছিলেন।
সুনীল দর্শন জানান, ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘জানোয়ার’-এর শুটিং চলাকালীন সময় অক্ষয়ের জীবনে ভয়ঙ্কর এক পর্যায় শুরু হয়েছিল। একের পর এক ছবি ব্যর্থ হওয়ায় অক্ষয় প্রায় সমস্ত বড় প্রযোজক ও পরিচালকের কাছে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছিলেন। তিনি জানান, তখনকার সময়ে বলিউডের প্রতিষ্ঠিত পরিচালক ও প্রযোজকরা অক্ষয়কে ‘জঞ্জাল’ হিসেবে অভিহিত করতেন, যা অভিনেতার মানসিক অবস্থাকে ভেঙে দেয়।
সাক্ষাৎকারে সুনীল দর্শন আরও বলেন, ‘অক্ষয়ের জনপ্রিয় ছবি ‘ধারকান’-এর কাজও স্থগিত হয়েছিল এবং ‘হেরা ফেরি’ ছবির শুটিং পিছিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় অক্ষয় মানসিকভাবে চরম চাপের মধ্যে ছিলেন। একবার তিনি অফিসে এসে কেঁদে ফেলেছিলেন, কারণ তার নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছিল, কিন্তু শহরের কোথাও কোনো পোস্টার লাগানো হয়নি। প্রযোজকের সঙ্গে যোগাযোগের সময় তাকে অত্যন্ত কটু ও রূঢ় আচরণে সম্মুখীন হতে হয়েছিল, যা তার মানসিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করেছিল।’
এই কঠিন সময়ে সুনীল দর্শন সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি অক্ষয়কে সমর্থন করবেন। তিনি ঝুঁকি নিয়ে মুম্বাইয়ের জুহু সার্কেল এলাকায় ‘জানোয়ার’ ছবির জন্য বিশাল একটি বিলবোর্ড স্থাপন করেন, যেখানে শুধু অক্ষয়ের ছবি প্রদর্শিত হয়। এই উদ্যোগ অক্ষয়ের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অক্ষয় কুমারের ক্যারিয়ারের প্রাথমিক এই অধ্যায়টি প্রমাণ করে যে বলিউডে সাফল্যের পথ সবসময় সরল নয়। একাধিক ব্যর্থতার মধ্যেও তার অধ্যবসায় এবং সহকর্মীদের সমর্থন তাকে প্রতিকূলতাকে জয় করার সুযোগ প্রদান করে। পরবর্তীকালে অক্ষয় কেবল সফল অভিনেতা হিসেবে নয়, বরং বলিউডের অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থায়ী তারকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
এই ঘটনা একই সঙ্গে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির কাজের পরিবেশ এবং নতুন প্রতিভাদের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জেরও একটি প্রতিফলন। প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের সমর্থন ও প্রযোজনা সংক্রান্ত উদ্যোগ কখনও কখনও একজন শিল্পীর ক্যারিয়ারের দিকে নির্ধারণমূলক প্রভাব ফেলে। অক্ষয় কুমারের জীবনের এই অধ্যায় থেকে উঠে আসে স্পষ্ট বার্তা যে প্রতিকূলতা মোকাবিলা এবং মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা চলচ্চিত্র জগতের প্রাথমিক সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।
মোটের উপর, অক্ষয় কুমারের প্রাথমিক সংগ্রাম, অপমান ও হতাশার মধ্য দিয়ে উত্থান, এবং সহকর্মীদের সমর্থনের গুরুত্ব, এ সব মিলিয়ে তার পরবর্তীকালের সাফল্যের ভিত্তি স্থাপন করে।


