জেলা প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম সেওতা এলাকায় অবস্থিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে’ গত রোববার দিবাগত রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের দ্বারা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানরা সেতুর দক্ষিণ পাশে অবস্থান করা এই স্মৃতিস্তম্ভটি পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় প্রায় সাড়ে তিনটার দিকে একটি কালো প্রাইভেট কারে তিনজন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসে। তারা স্মৃতিস্তম্ভের আশপাশে থাকা গাড়ির টায়ার জড়ো করে তাতে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্মৃতিস্তম্ভটি ধাতুর তৈরি হওয়ায় অগ্নিসংযোগের ফলে পুরোপুরি ক্ষতি না হলেও এর নিচের কিছু অংশ পুড়ে কালো রঙ ধারণ করেছে। পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছে এবং ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মানিকগঞ্জের সমন্বয়ক ওমর ফারুক অভিযোগ করেছেন, এটি ‘পরিকল্পিত নাশকতা’। তিনি বলেন, “নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সদস্যরা দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং স্মৃতিস্তম্ভে আগুন ধরাচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের সময় মানিকগঞ্জের পাঁচজন শহীদ হন। তাঁদের স্মৃতিকে সংরক্ষণ এবং স্মরণে রাখতে পশ্চিম সেওতা এলাকায় এই স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ এই ঘটনাকে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করেছে এবং অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও দায়িত্বে আনার জন্য তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনসাধারণ উদ্বিগ্ন, যেহেতু স্মৃতিস্তম্ভটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও স্মৃতিসৌধ হিসেবে বিবেচিত। পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং প্রমাণাদি সংগ্রহ শুরু করেছে। নিরাপত্তা ও জনশান্তি নিশ্চিত করতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ধরনের ঘটনা সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশাসন জানিয়েছে, অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনি ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


