স্বাধীনতার বিরোধী হলেও বাবা  যুদ্ধাপরাধী নন: ব্যারিস্টার আরমান

স্বাধীনতার বিরোধী হলেও বাবা যুদ্ধাপরাধী নন: ব্যারিস্টার আরমান

রাজনীতি  ডেস্ক

জামায়াতের প্রয়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে, ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাশেম (আরমান), গুম কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, তিনি ৮ বছর ‘আয়না ঘরে’ বন্দি ছিলেন। সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে আরমান তার পিতার মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্য বক্তব্য দিয়েছেন।

টকশোতে ব্যারিস্টার আরমান উল্লেখ করেন, তাঁর পিতা স্বাধীনতার সময় যদিও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন, কিন্তু কোনো সহিংস কর্মকাণ্ডে বা যুদ্ধাপরাধে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকা—এই দুটি বিষয় আলাদা। আমার পিতা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলেন দেশের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায়, কোনো সহিংসতার অংশ হিসেবে নয়।”

আরমান জানান, মীর কাশেম আলীর ধারণা ছিল যে, তখনকার বাংলাদেশ একটি ছোট ভূ-খণ্ডবিশিষ্ট দেশ, চারপাশে শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং অতীতে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ইতিহাসে পরিবেষ্টিত। সেই প্রেক্ষাপটে তিনি মনে করেছিলেন, স্বাধীনতা অর্জন করলে দেশ ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে। আরমান বলেন, “স্বাধীনতা কাম্য ছিল, কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সিকিমের মতো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। যদি আমরা জানতাম দেশ মুসলমান পরিচয় নিয়ে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াবে, আমরা কখনও বিরোধিতা করতাম না। আমাদের কাজ ছিল দেশের স্বার্থ বিবেচনা করা।”

আরমান স্পষ্ট করেছেন, তাঁর পিতা রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন, কিন্তু কোনো মানুষ হত্যা বা সহিংস অপরাধে যুক্ত ছিলেন না। এছাড়া তিনি টকশোতে স্বাধীনতার বিরোধিতা এবং তাঁর বিচারকে ‘জুডিশিয়ারি কিলিং’ হিসেবে দাবি করার প্রেক্ষাপট সম্পর্কেও ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ভিন্নমতের এবং ইতিহাসের পুনর্মূল্যায়নের প্রসঙ্গ নতুনভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। আরমানের বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান এবং স্বাধীনতা পরবর্তী নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর প্রেক্ষাপট নিয়ে সমসাময়িক গবেষণা ও আলোচনার সম্ভাবনাও বাড়াচ্ছে।

বিস্তারিত বিবরণে দেখা যায়, মীর কাশেম আলীর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহে দেশের নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার দিক বিবেচিত হয়েছিল। আরমানের মতামত দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস ও তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করছে।

এছাড়া, অভিযোগ দায়ের এবং টকশোতে প্রকাশিত বক্তব্যগুলো ন্যায়িক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাস ও রাজনৈতিক পর্যালোচনার জন্য প্রাসঙ্গিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রাজনীতি