খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা

জাতীয় ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রেক্ষিতে তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে চলেছে গুঞ্জন। তবে সম্প্রতি এক পোস্টে তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত তার একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। নিরাপত্তা বিষয়ক শঙ্কা থাকলেও সরকার জানিয়েছে, তারেক রহমানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রবেশের পর বিমানবন্দর থেকে তারেক রহমান স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) এর নিরাপত্তা পাবেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাধারণত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা সমমর্যাদার ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করে তাকে এসএসএফ নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই এবং তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো শঙ্কা নেই।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, দেশে ফেরার বিষয়ে এখনও তারেক রহমান কোনো উদ্যোগ নেননি। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) তার মায়ের কিছু মেডিকেল টেস্ট রয়েছে। টেস্টের রিপোর্ট নেতিবাচক হলে বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনা যাচাই করা হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে তিনি তাৎক্ষণিক দেশে ফিরে আসতে পারবেন। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ডিসেম্বরের ১১ তারিখের মধ্যে তারেক রহমান দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে দলের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর তারেক রহমান ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’ এই বক্তব্যের পর গুঞ্জন ওঠে, নিরাপত্তা বিষয়ক কারণে তিনি দেশে আসছেন না। তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বিবৃতি দেয়নি বিএনপি।

এছাড়া, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। দেশে ফেরার জন্য তিনি বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন, অথবা ট্রাভেল পাস নিতে হবে। সরকার আগেই জানিয়েছিল, তারেক রহমান চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখনও ট্রাভেল পাস চাননি।

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে কারো নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে প্রশ্নে তিনি জানান, বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে তা প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুত।

এর ফলে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত উভয়ের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক থাকায় রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ক প্রক্রিয়াগুলো কৌশলীভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ