শেখ হাসিনার পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিযুক্ত

শেখ হাসিনার পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিযুক্ত

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়েরকৃত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে মো. আমির হোসেনকে নিয়োগ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

আজ (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ এই নিয়োগের আদেশ দেন। এর আগে দুই মামলায় শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে জেড আই খান পান্না নিয়োগপ্রাপ্ত থাকলেও তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিজেকে প্রত্যাহার করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল মো. আমির হোসেনকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ শুনানিতে প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। একই সময়ে অপর প্রসিকিউটর এবং আসামী পক্ষের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত ৮ অক্টোবর এই দুই মামলায় শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী জানায় যে, মোট ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর সাবেক বা বর্তমান কর্মকর্তা। এদের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, একজন এলপিআরে স্থানান্তরিত এবং ১৫ জন বর্তমানে কর্মরত।

গ্রেফতারি পরোয়ানার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ আল সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) এবং দি প্রিজন অ্যাক্টের ধারা ৩ এর বি অনুযায়ী ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত এমইএস বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো’। গ্রেফতারকৃত সেনা কর্মকর্তাদের পরবর্তীতে এই কারাগারে রাখা হয়।

দুটি মামলার তদন্ত ও প্রসিকিউশন প্রক্রিয়া বর্তমানে চলমান। ট্রাইব্যুনালের এ পদক্ষেপের ফলে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে আসামী পক্ষের আইনি প্রতিরক্ষা নিশ্চিত হবে। এছাড়া মামলার শুনানি ও কার্যক্রম দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ট্রাইব্যুনাল আইনজীবী নিযুক্তির নিয়মাবলী অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

শুধু আইনজীবী নিয়োগ নয়, গ্রেফতারি পরোয়ানা, সেনা কর্মকর্তাদের হেফাজত এবং সাময়িক কারাগার ঘোষণাসহ মামলাগুলোতে যথাযথ আইনগত ও প্রশাসনিক কাঠামো নিশ্চিত করা হয়েছে। এই মামলার ফলাফল বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার মানবতাবিরোধী অপরাধের দৃষ্টিকোণ এবং সামরিক কর্মকর্তাদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

আইন আদালত শীর্ষ সংবাদ