আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিযোগ করেছেন যে, তাকে আদিয়ালা কারাগারে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) তার এক্স অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক পোস্টে ইমরান দাবি করেছেন, তাকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন সেলে রাখা হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় কোনো মানুষের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও দেওয়া হয়নি। তিনি উল্লেখ করেছেন, কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সাধারণ সুবিধাসমূহও তাকে দেওয়া হয়নি।
ইমরান খানের বোন ড. উজমা খান মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করেন। সাক্ষাৎকালে ইমরান তার ওপর পরিচালিত নির্যাতনের বর্ণনা দেন। এ ঘটনার পর তার বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, তাকে এবং তার স্ত্রীকে সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের নির্দেশে সাজানো মামলার মাধ্যমে আটক করা হয়েছে।
ইমরান খান ২০২২ সালের আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেহবাজ শরীফ ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। ২০২৩ সালে তিনি একবার গ্রেপ্তার হয়ে মুক্তি পান, তবে একই বছরের আগস্টে আবার গ্রেপ্তার হন এবং বর্তমানে কারাগারে বন্দি আছেন।
তার অভিযোগ, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনির পাকিস্তানের জন্য ধ্বংসাত্মক নীতি অনুসরণ করছেন এবং তার সিদ্ধান্তের ফলে সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ইমরান খান বলেন, “মুনিরের নীতি পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন, যাতে তাকে মুজাহিদ হিসেবে প্রদর্শন করা যায়।”
ইমরান আরও দাবি করেছেন, মুনির প্রথমে আফগান নাগরিকদের হুমকি দেন, পরে পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের বিতাড়ন করেন এবং ড্রোন হামলা চালান। এর ফলে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের উত্থান দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, “মুনিরের নৈতিকতার অভাব পাকিস্তানের সংবিধান ও আইনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করছে।”
এই অভিযোগসমূহ পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ইমরান খানের বক্তব্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তিনি নিজের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ কামনা করছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার ইমরান খান পাকিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর প্রকাশিত এই সমালোচনায় দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত এবং স্থিতিশীলতার প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সেনা-রাজনৈতিক সম্পর্কের তীব্রতা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।


