নিজস্ব প্রতিনিধি
ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীরা সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই অবস্থান বিক্ষোভে শহরের একাধিক সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক মাসুদ রানা জানান, মোবাইল ব্যবসায়ীরা সড়কে অবস্থান নিলে একপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিশুমেলা মোড় এবং আগারগাঁও এলাকার একাধিক সড়কে এ কারণে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। পুলিশ যানবাহনগুলোকে ভেতরের অলিগলিগুলোতে বিকল্প পথ দেখাচ্ছে। চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু করে কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া পর্যন্ত এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বিটিআরসি ভবনের সামনে সরকারের পদত্যাগ এবং সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি জানাচ্ছেন। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে স্লোগান, প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করছেন। আফতাবউজ্জামান নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, “সরকার একটি সীমিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্রভাব অনুযায়ী ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) কার্যকর করছে। এর ফলে কয়েক লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমার দোকানের ৬৬ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ রয়েছে, অনেকে কয়েক কোটি টাকার ঋণের মুখোমুখি।”
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, এনইআইআর বাস্তবায়নের আগে তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা সমন্বয় করা হয়নি। তারা বলেন, সরকার এই প্রক্রিয়া জোরপূর্বক চালু করতে চাচ্ছে, যদিও ব্যবসায়ীরা বৈধভাবে শোরুম ও বিপণিবিতান থেকে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
‘মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ’ ব্যানারের তলে হাজার খানেক ব্যবসায়ী ও কর্মচারী এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন বিপণিবিতান থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আগত ব্যবসায়ীরা সকালবেলা বিটিআরসি ভবনের সামনে সমবেত হন।
বিক্ষোভটি মূলত আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এনইআইআর প্রণয়নের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এনইআইআর প্রক্রিয়ায় কিছু সংস্কার, ন্যায্য করনীতি প্রণয়ন, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বক্তব্য ও প্রস্তাব না শুনেই একতরফা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এ অবস্থায় মোবাইল ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। বিটিআরসি ভবনের সামনে অবস্থান ও সড়ক অবরোধের মাধ্যমে তারা সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপ, মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করা এবং সরকারের নীতি সংশোধনের দাবি জোরদার করছেন।


