রাজনীতি ডেস্ক
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নবনির্বাচিত কমিটির প্রতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষায় আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। নবনির্বাচিত নেতৃত্বের উদ্দেশে পাঠানো এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সাংবাদিকতার পেশাগত মানোন্নয়ন, সংবাদকর্মীদের অধিকার সংরক্ষণ এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশে গণমাধ্যমের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
ডা. শফিকুর রহমানের মতে, ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমসহ নতুন কমিটির প্রতি সদস্যদের সর্বসম্মত সমর্থন দেশের সাংবাদিক সমাজে সংগঠনের প্রতি আস্থার প্রকাশ। তিনি বলেন, এই সমর্থন ডিইউজের দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক সক্ষমতা, পেশাগত অবস্থান এবং দায়িত্ব পালনের ধারাবাহিকতার প্রতি সাংবাদিকদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। তিনি আশা করেন, নতুন নেতৃত্ব গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, গণমাধ্যম যেকোনো গণতান্ত্রিক কাঠামোর অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। সঠিক তথ্য উপস্থাপন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিক অধিকারের সুরক্ষায় সংবাদকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার মতে, বর্তমান সময়ে পেশাগত ঝুঁকি, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, তথ্যপ্রবাহের গতিশীলতা এবং নীতিনির্ধারণী পরিবেশ—সব মিলিয়ে সাংবাদিকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এসব পরিস্থিতিতে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ডিইউজের নেতৃত্ব গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত স্বার্থ সংরক্ষণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও এটি অব্যাহত থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, সংবাদ পরিবেশনের স্বাধীনতা ও পেশার মর্যাদা অটুট রাখা একটি বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া, যেখানে সম্পাদকীয় স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, ন্যায়সংগত কর্মপরিবেশ এবং নীতিগত স্বচ্ছতা—সব উপাদান গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্বকে সম্মিলিতভাবে এসব বিষয়ে কার্যকর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
বিশ্লেষণধর্মী প্রেক্ষাপটে তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর গণমাধ্যম ব্যবস্থায় ডিজিটাল নিরাপত্তা, তথ্য সুরক্ষা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় সাংবাদিকদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। এর পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কাজ করা সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তিনি আশা করেন, ডিইউজের নতুন নেতৃত্ব এসব ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।
ডা. শফিকুর রহমান উল্লেখ করেন, সত্যনিষ্ঠ তথ্য উপস্থাপন সমাজে ন্যায়ভিত্তিক কাঠামো গঠনে সহায়তা করে এবং জাতীয় অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করে। তিনি বলেন, সংবাদকর্মীদের দায়িত্বশীল প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে পারে। সেই কারণে সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়ন এবং তাদের কণ্ঠস্বর রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সমাজ উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
ডিইউজের নতুন নেতৃত্বের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে তিনি আশা করেন, সংগঠনটি ভবিষ্যতে গণমাধ্যমের নীতিনিষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে অগ্রগতিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তিনি বিশ্বাস করেন, অভিজ্ঞ ও নবীন সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা, পেশাগত অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি সুষম তথ্যপরিবেশ নির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম শুধুমাত্র পেশাগত স্বার্থ রক্ষায় সীমাবদ্ধ নয়; বরং গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিইউজের নবনির্বাচিত নেতৃত্ব কীভাবে আগামী দিনে এই ভূমিকা আরও কার্যকরভাবে পালন করে—তা দেশের গণমাধ্যম পরিবেশের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।


