গুপ্তচরবৃত্তি ও অর্থনৈতিক অপরাধের অভিযোগে কিউবার সাবেক অর্থমন্ত্রী আলেহান্দ্রো হিলকে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ’ ও ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বা চুক্তি বাস্তবায়নে ক্ষতিকর কার্যকলাপের’ জন্য আদালত তাকে আজীবন কারাদণ্ড’ প্রদান করেছেন।
তবে ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা হিল কোন দেশের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন বা কী করেছেন আদালত সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
৬১ বছর বয়সী হিলকে দুর্নীতি, সরকারি নথি বা হেফাজতে থাকা সামগ্রী অপহরণ ও নষ্ট করা, সরকারি সিল ভঙ্গ ও গোপন নথি রক্ষার বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
আদালত জানিয়েছেন, তিনি যেসব গোপন তথ্যের দায়িত্বে ছিলেন, তার কাজে সংশ্লিষ্ট বিধি লঙ্ঘন করেছেন, সেসব নথি অপসারণ ও নষ্ট করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত শত্রুপক্ষের কাছে সরবরাহ করেছেন।
এ ছাড়া ঘুষ গ্রহণ, প্রভাব খাটানো ও কর ফাঁকির আলাদা একটি মামলায় তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই বিবৃতিতে আদালত জানান, এসব ধারাবাহিক দুর্নীতি, প্রভাব খাটানো ও কর জালিয়াতির অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
গত নভেম্বরের শুরুতে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়। কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াস-কানেলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হিলকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই তাকে জনসমক্ষে আর দেখা যায়নি।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তার হাতে ১০ দিন সময় রয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে কিউবার আইনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপিলের সুযোগ থাকে এবং এজন্য দ্বিতীয় দফা বিচার প্রয়োজন হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ১ নভেম্বর জানায়, গুপ্তচরবৃত্তি, ঘুষ, তহবিল আত্মসাৎ এবং কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয় এবং ১১ নভেম্বর বিচার শুরু হয়।
তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে কিউবা। বেসরকারি খাতের অগোছালো সম্প্রসারণ, তীব্র মুদ্রাস্ফীতি, দারিদ্র্য ও বৈষম্য বৃদ্ধির এই সময়ে হিলের মামলাটি সামনে আসে।
হিল হাভানা বন্দরে পরিবহন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
পরে তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং পরবর্তীতে তিনি আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন।
কিউবায় হঠাৎ পদচ্যুতির ঘটনা নতুন নয়। সংকট বা অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার সময় এমন ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। বিশেষ করে ১৯৮৯ সালে মাদক পাচারের অভিযোগে সাবেক গেরিলা কমান্ডার জেনারেল আরনালদো ওচোয়া ও তার সহযোগীদের বিচারে মৃত্যুদণ্ড প্রদান এবং কার্যকর করা হয়।


