এইচএসসি ২০২৫: ঢাকা বোর্ডে মূল নম্বরপত্র বিতরণ শুরু আজ

এইচএসসি ২০২৫: ঢাকা বোর্ডে মূল নম্বরপত্র বিতরণ শুরু আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মূল নম্বরপত্র বিতরণ আজ বুধবার থেকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বোর্ডের সনদ শাখা থেকে সংশ্লিষ্ট নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বোর্ডের এক অফিস আদেশে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ৪ নম্বর ভবনের ৫ তলা থেকে নম্বরপত্র বিতরণ করা হবে।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয় যে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী বোর্ডে উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মূল নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে হবে। বোর্ডের নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনপত্র, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিভাগভিত্তিক তালিকা এবং তিনটি নমুনা স্বাক্ষর সত্যায়িত করে নিয়ে আসতে হবে।

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী জেলা-ওয়ারী নম্বরপত্র বিতরণ হবে বিভিন্ন দিনে। অফিস আদেশে জানানো হয়েছে, টাঙ্গাইল ও ঢাকা জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে পারবে ১০ ডিসেম্বর। নরসিংদী ও ফরিদপুর জেলার জন্য নির্ধারিত তারিখ ১১ ডিসেম্বর। মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ জেলার নম্বরপত্র বিতরণ করা হবে ১৪ ডিসেম্বর। কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর। মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার নম্বরপত্র বিতরণ হবে ১৭ ডিসেম্বর। রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ জেলার জন্য নির্ধারিত তারিখ ১৮ ডিসেম্বর। গাজীপুর জেলার নম্বরপত্র বিতরণ করা হবে ২১ ডিসেম্বর এবং সর্বশেষ ধাপে ঢাকা মহানগরের নম্বরপত্র বিতরণ হবে ২২ ডিসেম্বর।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সনদ শাখায় নম্বরপত্র বিতরণের এই সূচি মূলত ভিড় কমানো, প্রশাসনিক কার্যক্রম সহজ করা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের জন্য প্রক্রিয়াটি আরও স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী করতে নির্ধারণ করা হয়েছে। বোর্ডের কর্মকর্তাদের মতে, নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী জেলা-ওয়ারীভাবে নম্বরপত্র বিতরণের ফলে সনদ শাখায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয় না এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সহজে প্রয়োজনীয় নথি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নম্বরপত্র গ্রহণ করতে পারেন।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অফিস আদেশে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, নম্বরপত্র সংগ্রহের সময় প্রতিনিধিকে অবশ্যই যথাযথ অনুমোদনপত্র নিয়ে আসতে হবে। এতে প্রতিষ্ঠানপ্রধান বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষর থাকতে হবে এবং প্রতিনিধি পরিবর্তিত হলে নতুনভাবে অনুমোদনপত্র দিতে হবে। তালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ও বিভাগভিত্তিক তথ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া নম্বপত্র গ্রহণের সময় যে তিনটি নমুনা স্বাক্ষর জমা দিতে হবে, তা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।

মূল নম্বরপত্র সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি প্রতি বছর শিক্ষা বোর্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রম। এই নম্বরপত্র পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তির আবেদন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য একাডেমিক প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তাই সময়মতো ও সঠিক নথিপত্রসহ নম্বরপত্র গ্রহণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতীতে দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নম্বরপত্র সংগ্রহ না করলে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আবেদনে বাধা সৃষ্টি হয় এবং প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়। ফলে এ বছরের বিতরণ কার্যক্রম নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সম্পন্ন করতে বোর্ড বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

ঢাকা বোর্ডের সনদ শাখা ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন বিতরণ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন এবং স্কুল-কলেজের প্রতিনিধিদের তথ্য যাচাই করে নম্বরপত্র প্রদান করবেন। বোর্ডের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত তারিখে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রতিনিধিরা উপস্থিত হতে না পারলে পরবর্তী তারিখে নম্বরপত্র বিতরণ করা হবে না। তাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের নির্ধারিত দিনের মধ্যেই নম্বরপত্র সংগ্রহের জন্য পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

নম্বরপত্র বিতরণ শুরু হওয়ায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শিক্ষাজীবনে অগ্রযাত্রা আরও এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। নির্ধারিত সময়সূচি অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নম্বরপত্র সংগ্রহ করলে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ একাডেমিক পরিকল্পনা সহজে সম্পন্ন করতে পারবে বলে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ