তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে আশাবাদ মির্জা আব্বাসের

তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে আশাবাদ মির্জা আব্বাসের

রাজনীতি ডেস্ক

আজ বুধবার রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন যে, অচিরেই তারেক রহমান দেশে ফিরে দল ও দেশের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে তিনি আশা করেন। তবে তার দেশে ফেরার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা তিনি উল্লেখ করেননি। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় মির্জা আব্বাস বলেন, দলের নেতৃত্বে বর্তমানে যাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ফলে দল পুনর্গঠনের বিভিন্ন উদ্যোগ চলছে। তিনি উল্লেখ করেন যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভবিষ্যতে দেশে ফিরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হলে দল আরও সুসংগঠিতভাবে সামনে এগোতে পারবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বের সক্ষমতা এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা দলের শ্রেণিচ্যুতি নিরসন ও সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বক্তব্যে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তাঁর অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চিকিৎসার অগ্রগতি ইতিবাচক থাকবে এবং তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারবেন। খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, দীর্ঘ নেতৃত্ব ও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সহায়ক হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

মির্জা আব্বাস বক্তব্যে আরও বলেন, অসুস্থতার সময় সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার জন্য যে দোয়া মাহফিল ও প্রার্থনার আয়োজন দেখা গেছে, তা জনমানুষের মাঝে তাঁর প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, দলমত নির্বিশেষে দেশের বহু মানুষ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করছে, যা তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক যাত্রা ও নেতৃত্বের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থনের ইঙ্গিত বহন করে। এ ধরনের সামাজিক প্রতিক্রিয়া বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আলোচনা সভায় বক্তারা ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। মির্জা আব্বাস বলেন, দেশব্যাপী অর্থনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধি, সংগঠনের আধুনিকায়ন এবং জনগণের অংশগ্রহণমূলক নেতৃত্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।

বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারের দাবি নিয়ে আলোচনা হলেও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব খুব কমই আসে। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, যে কোনো সংস্কার প্রক্রিয়া অর্থবহ করতে হলে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন কাঠামো এবং নেতৃত্বের সার্বিক সহযোগিতা। তিনি ইতিহাসের উদাহরণ টেনে বলেন, অতীতে জিয়াউর রহমান দেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন এনেছিলেন, তা দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য ইতিবাচক ফল দিয়েছে এবং এসব সংস্কার ঘোষণামূলক ছিল না বরং বাস্তবমুখী ছিল।

সভায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দিনব্যাপী আলোচনার অংশ হিসেবে চেয়ারম্যানের বক্তব্যসহ নীতিগত বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করা হবে বলে আয়োজকরা জানান। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক কাঠামোর উন্নয়নে একটি সমন্বিত কর্মপন্থা তৈরি করা সম্ভব হবে।

আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি সুসংহত ও বাস্তবমুখী জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের পরিকল্পনা কার্যকর হলে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি, গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা নতুন গতিপ্রাপ্ত হবে বলে তাঁরা আশা করেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন এবং সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগামী দিনের কর্মসূচি বিষয়ে মতামত দেন।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ