নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় জুলাই রেবেলস সংগঠনের সদস্য মোহাম্মদ রেজওয়ানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে উত্তরা ছয় নম্বর সেক্টর এলাকায় মোহাম্মদ রেজওয়ানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। হামলায় তিনি আহত হলে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তাকে দ্রুত নিকটস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উত্তরা পূর্ব থানা সূত্র জানায়, হামলার খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়। আহত ব্যক্তির কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ নেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা শুরু করে পুলিশ। একই সঙ্গে ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সম্ভাব্য আসামিদের ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান জোরদার করা হয়।
ডিএমপি জানায়, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খানকে এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর পরপরই তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে।
পুলিশের অভিযানের অংশ হিসেবে রোববার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মামলার দুই এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে কী ধরনের আলামত উদ্ধার হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডিএমপি কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হামলার পেছনে কী উদ্দেশ্য ছিল, কারা পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল এবং ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না—এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় জড়িত অন্য কোনো ব্যক্তি থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি হামলার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র বা অন্যান্য উপকরণ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তদন্তের অংশ হিসেবে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, যাতে হামলার সঠিক সময়কাল ও সংশ্লিষ্টদের গতিবিধি নির্ধারণ করা যায়।
ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং এ ধরনের সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এদিকে হামলার ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উত্তরা এলাকায় অতিরিক্ত নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক তথ্য পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত অগ্রগতি এবং গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পরবর্তী সময়ে জানানো হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।


