এল ক্লাসিকোর পর ওসাসুনাকে হারিয়ে লা লিগায় ব্যবধান বাড়াল বার্সেলোনা

এল ক্লাসিকোর পর ওসাসুনাকে হারিয়ে লা লিগায় ব্যবধান বাড়াল বার্সেলোনা

খেলাধুলা ডেস্ক

এল ক্লাসিকোয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের কাছে পরাজয়ের পর লা লিগায় দারুণ ছন্দে রয়েছে বার্সেলোনা। সেই ধারাবাহিকতারই অংশ হিসেবে ওসাসুনার বিপক্ষে ঘরের মাঠে আরেকটি নিয়ন্ত্রিত জয় তুলে নিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। শনিবার রাতে ক্যাম্প ন্যুতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ২-০ গোলে জিতে লিগ শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

ম্যাচের দুই গোলই করেছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল রাফিনিয়া। প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ তৈরি করলেও সফলতার দেখা পায়নি বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের গতি বাড়িয়ে নির্ধারিত সময়ের শেষভাগে দুই গোল আদায় করে নেয় তারা। গোল না পেলেও স্প্যানিশ তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামাল ম্যাচজুড়ে আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

ঘরের মাঠে শুরু থেকেই বলের নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সেলোনা। ম্যাচজুড়ে তাদের দখলে ছিল প্রায় ৭০ শতাংশ পজেশন। আক্রমণাত্মক ফুটবলে ওসাসুনাকে চাপে রাখলেও প্রথমার্ধে কাঙ্ক্ষিত গোল আসেনি। তবে ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণে তীব্রতা দেখায় স্বাগতিকরা। মাঝমাঠ থেকে দ্রুত বল ছড়িয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করে হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।

২০ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে একটি ভালো সুযোগ পায় সফরকারী ওসাসুনা। ফরোয়ার্ড আন্তে বুদেমিরের নেওয়া শটটি দক্ষতার সঙ্গে রুখে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক হুয়ান গার্সিয়া। ওই সেভ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে, কারণ এরপর থেকেই আক্রমণের চাপ আরও বাড়ায় বার্সেলোনা।

প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা পায়নি কাতালানরা। এক পর্যায়ে মার্কাস রাশফোর্ডের ক্রসে ফেররান তোরেসের হেড থেকে বল জালে গেলেও অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়। আক্রমণের শুরুতে রাফিনিয়া অফসাইড অবস্থানে থাকায় রেফারির সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। ফলে বিরতিতে গোলশূন্য সমতায় মাঠ ছাড়ে দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আরও সংগঠিত আক্রমণ শুরু করে বার্সেলোনা। মাঝমাঠে পেদ্রি ও ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা অব্যাহত থাকে। দীর্ঘ সময় গোল না পেলেও ম্যাচের ৭০ মিনিটে অবশেষে ব্যবধান গড়ে তোলে স্বাগতিকরা। পেদ্রির বাড়ানো বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শক্তিশালী শটে গোল করেন রাফিনিয়া। এই গোলের মাধ্যমে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বার্সেলোনার হাতে চলে যায়।

লিড নেওয়ার পরও আক্রমণাত্মক মনোভাব ধরে রাখে কাতালানরা। ৮৬ মিনিটে আসে তাদের দ্বিতীয় গোল। জুলস কুন্দের ডান প্রান্তের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুল করেন ওসাসুনার এক ডিফেন্ডার। বল গিয়ে পড়ে রাফিনিয়ার সামনে। কোনো দ্বিধা না করে এক স্পর্শে বল জালে পাঠান তিনি। এতে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের জন্য নিশ্চিত জয় নিশ্চিত করেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট ছিল বার্সেলোনার আধিপত্য। পুরো ম্যাচে তারা ১৭টি শট নেয়, যার মধ্যে ৭টি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, ওসাসুনা মাত্র তিনটি শট নিতে সক্ষম হয় এবং তার মধ্যে একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। রক্ষণ ও আক্রমণ—দুই বিভাগেই ব্যবধান স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।

এই জয়ের ফলে লা লিগায় বার্সেলোনার টানা সপ্তম জয় নিশ্চিত হলো। ১৭ ম্যাচে ১৪ জয় ও এক ড্রয়ে তাদের সংগ্রহ ৪৩ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ফলে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে রিয়ালের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াল সাত পয়েন্টে।

মৌসুমের এই পর্যায়ে ধারাবাহিক এই জয় বার্সেলোনাকে শিরোপা দৌড়ে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। সামনে ব্যস্ত সূচিতে লিগের পাশাপাশি ইউরোপীয় প্রতিযোগিতাও থাকায় স্কোয়াড ব্যবস্থাপনা ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ধরে রাখা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

খেলাধূলা শীর্ষ সংবাদ