ওসাসুনাকে হারিয়ে লা লিগার শীর্ষে অবস্থান আরও দৃঢ় করল বার্সেলোনা

ওসাসুনাকে হারিয়ে লা লিগার শীর্ষে অবস্থান আরও দৃঢ় করল বার্সেলোনা

খেলাধুলা ডেস্ক

লা লিগায় শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে এগিয়ে চলা বার্সেলোনা ঘরের মাঠে ওসাসুনার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ক্যাম্প নউয়ে অনুষ্ঠিত ম্যাচে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা ২–০ গোলে জয় পায়। দুই গোলই আসে দ্বিতীয়ার্ধে, দুটিতেই গোলদাতা ছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া। এই জয়ের ফলে টানা সাত ম্যাচে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেল কাতালান ক্লাবটি।

এই ম্যাচের মাধ্যমে বার্সেলোনা ১৭ ম্যাচে ১৪টি জয় ও একটি ড্র নিয়ে সংগ্রহ করেছে ৪৩ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাসিকোয় রিয়ালের কাছে হারের পর লিগে ধারাবাহিক এই জয় বার্সেলোনার শিরোপা দৌড়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।

ম্যাচের শুরু থেকেই বলের দখলে স্পষ্ট আধিপত্য বিস্তার করে স্বাগতিক দল। পুরো ম্যাচে প্রায় ৮০ শতাংশ সময় বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে বার্সেলোনা। গোলের উদ্দেশ্যে তারা মোট ২৪টি শট নেয়, যার মধ্যে সাতটি লক্ষ্যে ছিল। বিপরীতে, ওসাসুনা তিনটি শট নিতে সক্ষম হয়, যার দুটি লক্ষ্যে ছিল। পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে দেয় ম্যাচজুড়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলে বার্সেলোনার প্রাধান্য।

তবে প্রথমার্ধে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি ফ্লিকের দল। বরং ২০তম মিনিটে হঠাৎ করেই সুযোগ তৈরি করে ওসাসুনা। ফরোয়ার্ড আন্তে বুদিমিরের নেওয়া শট দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করে গোললাইন রক্ষা করেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক হোয়ান গার্সিয়া। এই সেভ স্বাগতিকদের রক্ষণভাগে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়।

২৩তম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় বার্সেলোনা। মার্কাস র্যাশফোর্ডের বাড়ানো ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে হেডে বল জালে পাঠান ফেররান তরেস। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ভিডিও সহকারী রেফারির (ভিএআর) পর্যালোচনার পর গোলটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। যদিও তরেস অফসাইডে ছিলেন না, আক্রমণের শুরুতে ডান দিক থেকে নেওয়া ছোট কর্নারে রাফিনিয়া যখন লামিনে ইয়ামালকে পাস দেন, তখন ফিরতি বল গ্রহণের মুহূর্তে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড অফসাইড অবস্থানে ছিলেন। সেই কারণেই গোলটি বাতিল হয়।

প্রথমার্ধে একাধিক আক্রমণ শানালেও গোলের দেখা না পাওয়ায় বিরতিতে ০–০ সমতায় মাঠ ছাড়ে দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে গতি বাড়ায় বার্সেলোনা এবং শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় তারা ৭০তম মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে পেদ্রি বল নিয়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে ডান দিকে থাকা রাফিনিয়াকে পাস দেন। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শক্তিশালী শটে প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বল জালে পাঠান ২৮ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

গোল পাওয়ার পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। ওসাসুনা সমতা ফেরানোর চেষ্টা করলেও বার্সেলোনার সংগঠিত রক্ষণ ও মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণের কারণে স্পষ্ট কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি সফরকারী দল। নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট বাকি থাকতে ব্যবধান দ্বিগুণ করে জয় নিশ্চিত করেন রাফিনিয়া। লামিনে ইয়ামালের পাস পেয়ে বক্সে ঢুকে ক্রস করেন ডিফেন্ডার জুল কুন্দে। প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল দূরের পোস্টে এলে ভলিতে ফাঁকা জালে পাঠান বার্সেলোনা অধিনায়ক।

এই জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করল বার্সেলোনা। ধারাবাহিক এই পারফরম্যান্স দলের সামগ্রিক ছন্দ ও আক্রমণভাগের কার্যকারিতা তুলে ধরছে। সামনে ব্যস্ত সূচি অপেক্ষা করছে কাতালানদের। আগামী মঙ্গলবার কোপা দেল রের শেষ বত্রিশে তৃতীয় স্তরের দল গুয়াদালাহারার বিপক্ষে মাঠে নামবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সেই ম্যাচে দল ঘুরিয়ে খেলানোর সম্ভাবনা থাকলেও লিগ ও কাপ—দু’টি প্রতিযোগিতাতেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই হবে ফ্লিকের দলের মূল লক্ষ্য।

খেলাধূলা শীর্ষ সংবাদ