খেলাধুলা ডেস্ক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের পর লা লিগায় জয়ের ধারায় ফিরেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ঘরের মাঠে শনিবার রাতে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ২-১ গোলের জয় পায় দিয়েগো সিমিওনের দল। প্রথমার্ধে কোকে ও দ্বিতীয়ার্ধে আঁতোয়া গ্রিজমানের গোল আতলেতিকোকে পূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দেয়। ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে একমাত্র গোলটি করেন লুকাস বেলত্রান।
মাদ্রিদের ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা। খেলা শুরুর এক মিনিটের মধ্যেই বিপদে পড়তে বসেছিল আতলেতিকো। ভ্যালেন্সিয়ার ফরোয়ার্ড হুগো দুরোর নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। সেই মুহূর্তে গোল হজম করলে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারত। তবে শুরুর চাপ সামলে ধীরে ধীরে নিজেদের খেলা গুছিয়ে নেয় স্বাগতিকরা।
মিডফিল্ডে কোকে ও রদ্রিগো দে পলের নিয়ন্ত্রিত পাসিং এবং রক্ষণভাগে হোসে হিমেনেস ও স্টেফান সাভিচের দৃঢ়তায় ম্যাচে ভারসাম্য ফেরাতে সক্ষম হয় আতলেতিকো। এর ফল আসে ১৭ মিনিটে। কর্নার থেকে আসা বল ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে না পারলে সুযোগ পেয়ে যান অধিনায়ক কোকে। বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া নিচু শটে তিনি বল জালে পাঠান, এতে এগিয়ে যায় আতলেতিকো মাদ্রিদ।
গোল হজমের পর ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায়। মাঝমাঠে পেপেলু ও আন্দ্রে আলমেইদার মাধ্যমে আক্রমণ সাজাতে থাকে সফরকারীরা। ৩৪ মিনিটে পেপেলু বল জালে পাঠালেও ভিডিও সহকারী রেফারির সিদ্ধান্তে সেটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। এতে সমতায় ফেরার সুযোগ হারায় ভ্যালেন্সিয়া। প্রথমার্ধের বাকি সময় আতলেতিকো কিছুটা রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করে বিরতিতে যায়।
বিরতির পর ভ্যালেন্সিয়া আরও আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামে। বল দখলে রেখে দ্রুত আক্রমণে যাওয়ার কৌশল নেয় তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ৬৩ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত সমতা আসে। দলীয় আক্রমণ থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে দুর্দান্ত শটে গোল করেন লুকাস বেলত্রান। গোলটি আতলেতিকোর রক্ষণভাগের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে আসে এবং ম্যাচে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
সমতা ফেরানোর পর ভ্যালেন্সিয়া ধারাবাহিকভাবে আতলেতিকোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বেশ কয়েকটি আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত থাকতে হয় আতলেতিকোর রক্ষণভাগকে। এমন পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞ আঁতোয়া গ্রিজমান দলের হাল ধরেন। মাঠে তার চলাচল ও বল ধরে রাখার ক্ষমতা আতলেতিকোকে পুনরায় সংগঠিত হতে সাহায্য করে।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে আসে निर्णায়ক মুহূর্ত। ডান প্রান্ত থেকে মার্ক পুবিলের নেওয়া লম্বা পাস নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রণে এনে ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণভাগকে কাটিয়ে গোল করেন গ্রিজমান। তার ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিং আতলেতিকোকে আবারও এগিয়ে দেয়। এই গোলের পর ম্যাচের গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে স্বাগতিকরা।
শেষ সময়গুলোতে ভ্যালেন্সিয়া সমতায় ফেরার চেষ্টা করলেও আতলেতিকোর সংগঠিত রক্ষণ ও মাঝমাঠের চাপের মুখে তারা আর কার্যকর সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। নির্ধারিত সময় শেষে ২-১ গোলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
এই জয়ের ফলে লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ফিরেছে আতলেতিকো। ১৭ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে তারা। অন্যদিকে, এক ম্যাচ কম খেলে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১৭ নম্বরে অবস্থান করছে ভ্যালেন্সিয়া। লিগের পরবর্তী অংশে দুই দলের জন্যই এই ফলাফল ভিন্ন ভিন্ন বার্তা বহন করছে—আতলেতিকোর জন্য শিরোপার আশা জিইয়ে রাখা এবং ভ্যালেন্সিয়ার জন্য অবনমন অঞ্চল এড়াতে সংগ্রাম জোরদার করার তাগিদ।


