অভিনয়ে ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায় তটিনী: মডেলিং থেকে ছোট পর্দা ও চলচ্চিত্র

অভিনয়ে ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায় তটিনী: মডেলিং থেকে ছোট পর্দা ও চলচ্চিত্র

বিনোদন ডেস্ক
স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ার হলেও ধারাবাহিক কাজের মাধ্যমে অভিনয়ে নিজের অবস্থান গড়ে তুলছেন অভিনেত্রী তটিনী। ২০১৯ সালে মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু করে ২০২২ সালে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে তাঁর। এরপর টেলিভিশন নাটক, ওয়েব কনটেন্ট এবং চলচ্চিত্র—সবখানেই নিয়মিত উপস্থিতি রেখে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। অভিনয়ের প্রতি নিবেদন ও ধারাবাহিক প্রস্তুতিকে সামনে রেখে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য স্থির করেছেন তিনি, যাতে ভবিষ্যতে দর্শক তাঁর কাজের মাধ্যমেই তাঁকে স্মরণ করেন।

তটিনীর শৈশব পরিকল্পনায় অভিনয় ছিল না। ছোটবেলা থেকেই তাঁর আগ্রহ ছিল চিকিৎসাবিদ্যায়, বিশেষ করে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন। সে লক্ষ্যেই মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে জীবনের ভিন্ন এক বাঁকে তিনি যুক্ত হন মডেলিংয়ে এবং সেখান থেকেই অভিনয়ের জগতে প্রবেশ ঘটে। ব্যক্তিগত আগ্রহ ও পেশাগত সুযোগের সমন্বয়ে অভিনয়ই পরবর্তী সময়ে তাঁর প্রধান কর্মক্ষেত্র হয়ে ওঠে।

২০১৯ সালে বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের মধ্য দিয়ে তটিনীর পেশাগত যাত্রা শুরু হয়। প্রথম স্ক্রিন টেস্টেই নির্বাচিত হওয়া ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা। পরবর্তী কয়েক বছর তিনি মূলত বিজ্ঞাপনচিত্রেই কাজ করেন এবং ক্যামেরার সামনে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এই সময়টি তাঁর অভিনয় প্রস্তুতির ভিত্তি গড়ে দেয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

২০২২ সালে তটিনীর অভিনয়ে অভিষেক ঘটে। একই বছরে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ‘শারদা প্রাতে’, যা পূজা উপলক্ষে নির্মিত হয়। নাটকটি প্রচারের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে তাঁর উপস্থিতি দৃশ্যমান হতে শুরু করে। পরবর্তীতে নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় ‘সুহাসিনী’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। এ নাটক তাঁকে ছোট পর্দার একজন সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

এরপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন তটিনী। ‘পথে হলো পরিচয়’, ‘সময় সব জানে’, ‘শেষ ঘুম’, ‘প্রণয়’ ও ‘লাস্ট নাইট’সহ একাধিক নাটকে তিনি কাজ করেন। এসব প্রজেক্টে তিনি ছোট পর্দার অভিজ্ঞ অভিনেতাদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পান, যা তাঁর অভিনয় দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। চরিত্রের বৈচিত্র্য ও সংলাপনির্ভর অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ধীরে ধীরে দর্শকের নজর কাড়েন।

ছোট পর্দায় কাজের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তটিনী ওয়েব কনটেন্টেও যুক্ত হন। এ মাধ্যমে কাজ করার ফলে ভিন্ন ধরনের গল্প ও চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ তৈরি হয়, যা তাঁর অভিনয় পরিসরকে বিস্তৃত করে। একই সঙ্গে চলচ্চিত্রেও তাঁর পদচারণা শুরু হয়। ‘জয়া আর শারমীন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি রুপালি পর্দায় অভিষেক করেন। এ ছবিতে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন জয়া আহসান। চলতি বছরে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় এবং এর মাধ্যমে তটিনী বড় পর্দার দর্শকদের কাছেও পরিচিত হয়ে ওঠেন।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ইতোমধ্যে তিনি কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেছেন। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, স্বল্প সময়ে এ স্বীকৃতি তাঁর ধারাবাহিক পরিশ্রম ও প্রস্তুতির প্রতিফলন। তটিনী নিজেও অভিনয় দক্ষতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাঁর মতে, দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে হলে কাজের প্রতি সততা, নিষ্ঠা ও প্রস্তুতি অপরিহার্য।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তটিনী জানিয়েছেন, তিনি এমন পর্যায়ে পৌঁছাতে চান, যাতে বহু বছর পরও দর্শক তাঁর কাজের মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করেন। জনপ্রিয়তা বা তাৎক্ষণিক সাফল্যের পরিবর্তে কাজের মান ও চরিত্র নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি এগোতে চান। নাটক, ওয়েব কনটেন্ট ও চলচ্চিত্র—তিন মাধ্যমেই নিয়মিত কাজের মাধ্যমে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করাই তাঁর বর্তমান লক্ষ্য।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ