জেলা প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপি নেতা বীরু মোল্লা (৬০) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি মৃত আবুল মোল্লার ছেলে এবং লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিহত বীরু মোল্লার ছেলে রাজিব মোল্লা জানান, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা জহুরুল মোল্লা এবং তার ছেলে আল আমিন মোল্লা জোরপূর্বক বীরু মোল্লার জমি থেকে ইটভাটার জন্য মাটি কেটে নেন। পরবর্তীতে বুধবার সকালে মাটি কাটার বিষয়টি জানতে জহুরুল মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে বীরু মোল্লাকে মাথায় গুলি করেন।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী বীরু মোল্লাকে দ্রুত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. তাসনিম তামান্না স্বর্ণা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, জহুরুল মোল্লা এবং নিহত বীরু মোল্লা আপন চাচাতো ভাই। স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পেছনে পারিবারিক সম্পত্তি ও ইটভাটার মাটি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজমল হোসেন সুজন জানান, “নিহত নেতাকে হত্যার ঘটনা কোন রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত।”
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুজ্জামান কালবেলা জানান, “বীরু মোল্লা নামে বিএনপি নেতা নিহত হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি এবং তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে পূর্বেও পারিবারিক বিরোধের কারণে উত্তেজনা বিরাজ করত। এই হত্যাকাণ্ডের প্রভাবে স্থানীয় শান্তি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।
পাবনার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য স্থানীয় প্রশাসন নজরদারি বাড়িয়েছে এবং সম্ভাব্য মাটি-সম্পত্তি বিরোধিতার পেছনের অন্যান্য পক্ষও খুঁজে বের করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পারিবারিক ও রাজনৈতিক সংঘর্ষ প্রতিরোধে প্রশাসনের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।


