রাজনীতি ডেস্ক
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় পর প্রবাসে অবস্থানের অধ্যায় শেষ করে আগামী ২৫ ডিসেম্বর আমি দেশে চলে যাচ্ছি, ইনশাআল্লাহ ।
অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, এই আয়োজনটি দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস, অন্যদিকে এটি তাঁর দীর্ঘ প্রবাসজীবনের প্রেক্ষাপটে একটি স্মরণীয় সময়। তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেছেন এবং এই সময়ে প্রবাসী দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। এই বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রবাসী সহযোদ্ধাদের সঙ্গে শান্ত ও সংযতভাবে কিছু কথা বলার উদ্দেশ্যেই তিনি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
লন্ডনে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে তারেক রহমান বিজয় দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, এই দিনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদার প্রতীক। তিনি বলেন, বিজয় দিবস শুধু অতীতের একটি স্মৃতি নয়, বরং ভবিষ্যতের পথচলায় গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণা জোগায়।
তারেক রহমান দীর্ঘ প্রবাসজীবনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই সময়ে তিনি দলীয় কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন না। বরং বিদেশে অবস্থান করেও দলকে সংগঠিত রাখা, নীতিনির্ধারণী বিষয়ে মতামত দেওয়া এবং প্রবাসী নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, এই সময়টি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা ভবিষ্যৎ দায়িত্ব পালনে অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজে লাগবে।
তিনি দেশে ফেরার প্রসঙ্গে বলেন, এটি একটি স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ। তাঁর বক্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, দেশে ফিরে তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হতে চান। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি বা রাজনৈতিক পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেননি। তিনি শুধু বলেন, দেশে ফিরে তিনি জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে চান এবং দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতারা তাদের বক্তব্যে বিজয় দিবসের গুরুত্ব, প্রবাসী রাজনীতির ভূমিকা এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, প্রবাসে থেকেও দলীয় ঐক্য ও সাংগঠনিক শক্তি ধরে রাখার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ ধরনের আলোচনা সভা দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ ও মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণাটি বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন। তবে তাঁর ফেরার সময়সূচি ও পরবর্তী রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি।


