নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্দেশনার তিন ঘণ্টার মধ্যেই মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রবিউল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিউল হোসেনকে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর গলাচিপা এলাকার নিজ বাসা থেকে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী।
রবিউল হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনি ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো রবিউলও কিছু সময়ের জন্য আত্মগোপনে ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি নিজ বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন।
গ্রেপ্তারের আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিকেএমইএ ভবনে এক অনুষ্ঠানের পরে পথ আটকায় ছাত্র-জনতার একটি দল। তারা উপদেষ্টার কাছে ওসমান পরিবারের সহযোগী এবং কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের অন্তর্ভুক্ত সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন। এই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্দেশ দেন যে, আওয়ামী লীগের যেসব নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বা অপরাধমূলক কার্যকলাপের অভিযোগ আছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হবে।
উক্ত নির্দেশনার পর মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে রবিউল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম জানান, “রবিউল হোসেনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় পূর্বে দায়ের করা একটি নিয়মিত মামলা রয়েছে। ওই মামলাতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিউল হোসেনের গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ বিভাগ পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে। গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব এবং স্থানীয় নেতৃত্বের ওপর কেন্দ্রীয় নজরদারির প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রবিউল হোসেনের গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত নেতার কার্যক্রম ও এলাকায় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসন আরও তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই ঘটনা এলাকার রাজনৈতিক পরিবেশে প্রভাব ফেলতে পারে এবং ভবিষ্যতে স্থানীয় নির্বাচনী বা প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গ্রেপ্তারের ঘটনা পুলিশি তৎপরতা, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরদারি এবং স্থানীয় রাজনৈতিক শক্তি কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।


